মো. নাজির হোসেন,মুন্সীগঞ্জ: দেশের অন্যতম উৎপাদনকারী অঞ্চল রাজধানীর কাছের জেলা মুন্সীগঞ্জে এবার আলু আবাদ কমতে যাচ্ছে। গেলো বারের লোকসানের পাশাপাশি হিমাগার গুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমান আলু অবিক্রিত থাকায় কৃষকের মাঝে আলু আবাদে আগ্রহের ঘাটতি দেখা যাবে। জেলার ৬ টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ৬০০০ কোটি টাকা
গেলো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে আলু আবাদ করবে কৃষককুল। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, জেলার ৬ টি উপজেলা যথাক্রমে সদর, শ্রীনগর, লৌহজং, সিরাজদীখান, গজারিয়া ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার উচু জমিতে আগাম আলু আবাদ শুরু করেছেন কৃষককুল। একই নীচু জমি গুলোতে আলু আবাদের প্রস্তুতি চলছে তাদের।
আরও পড়ুন: জাভায় ভূমিকম্প, নিহত বেড়ে ১৬২
সদর উপজেলার চরাঞ্চল চরকেওয়ার ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে আলু চাষাবাদে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বেশ কয়েকজন কৃষক।
ওই গ্রামের কৃষক মনসুর দেওয়ান বলেন, ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ জমিতে আলু লাগিয়েছি। তবে গেলো বারের লোকসান পুষিয়ে উঠানো নিয়েও রয়েছে শংকা। উপরন্তু গেলো বারের বেশ কিছু পরিমান আলু হিমাগারে অবিক্রিত রয়ে গেছে। তারউপর এবার সারের দাম বেশী। শ্রমিকের মজুরীও বেশী। সব কিছু মিলিয়ে এবার আলু চাষাবাদ কমবে বলে মনে করি।
আরও পড়ুন: কলম্বিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৮
জেলার সিরাজদীখান উপজেলার বালুচর গ্রামের কৃষক আলী মিয়া জানান, এ অঞ্চলের জমি গুলো বেশ উঁচু। তাই এখানকার কৃষকরা আগাম আলু আবাদ করে থাকেন। ইতোমধ্যে এখানকার ৬০ শতাংশ জমিতেই আলু রোপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, গেলো বারের লোকসান পুষিয়ে নিতে চাই। তবে বীজ ও সারের দাম বেশী। একই সঙ্গে শ্রমিকের মজুরী বেশী। তাই গেলো বারের তুলনায় আলু আবাদ কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে জেলা সদরে ৯ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর,সিরাজদীখানে ৯ হাজার ১৯১ হেক্টর, শ্রীনগরে ২ হাজার হেক্টর, গজারিয়া ২ হাজার হেক্টর ১০৫ হেক্টর ও লৌহজং উপজেলায় ৩ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি ছিনতাই নিছক দুর্ঘটনা
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশিদ আলম জানান, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এ জেলায় আলু চাষাবাদ কম হবে। এ অঞ্চলের কৃষককুল অরিকো, মালতা, ডায়মন্ড, পেরটোনাইস ও বিএডিসির আলু রোপন করে থাকে।
এ বছর জেলায় ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ১০ লাখ ৯৭ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আলুর চাহিদা ৮০ লাখ মেট্রিক টন। গেলো মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। বিদেশে আলু রফতানি করা যাচ্ছে না। তাই আমরা আলুর পরিবর্তে কৃষকদের অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি কৃষকদের আলু আবাদ কম করে বিকল্প হিসেবে ধান, সরিষা ও শাকসবজি চাষাবাদের অনুরোধ করেছেন।
সান নিউজ/এমআর