রাকিব হাসনাত, পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে তাঁতবস্ত্র ও কুটির শিল্পমেলায় গত কয়েকদিন ধরে চলে আসছিল অনুমোদনহীন লটারীর রমরমা ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছিল অবৈধ লটারীর ব্যবসা।
আরও পড়ুন: ঐন্দ্রিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক
লটারীতে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, ফ্রিজসহ লোভনীয় পুরস্কার পাওয়ার লোভে প্রতিদিন টিকিট কিনে প্রতারিত হয়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার প্রতিটি উপজেলায় মাইকিং করে চলেছে লটারীর টিকিট বিক্রি।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চাটমোহরে ওই মেলার লটারীর টিকিট বিক্রির সময় সাতজন টিকিট বিক্রেতাকে আটকের পর তাদের ১ মাসের কারাদণ্ড দেন এবং লটারীর মালামাল জব্দ করেন ভ্রাম্যমান আদালত। আর অপরদিকে, বিকেলে ভেঙে দেয়া হয়েছে মেলা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি যুবক নেইমারের ‘বন্ধু’
জানা গেছে, চাটমোহর পৌর সদরের শাহী মসজিদ মোড়ে এলাকাবাসী প্রথমে লটারী বিক্রেতাকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। খবর পেয়ে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ মহল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে একমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা জালাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, জয়পুরহাটের পন্ডিতপুর গ্রামের সাজু হোসেন, ভাদশা গ্রামের মেশকাত আলী, নূর আলম ও আহাদ আলী, দেবরাইল গ্রামের মতিবুল ইসলাম, কান্দি গ্রামের নাহিদ হোসেন ও বুলপাড়া গ্রামের মিঠু হোসেন। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে নয়টি মাইক সেট, নয়টি ড্রাম, কয়েক হাজার অবিক্রিত টিকিট ও লটারীর অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। পরে সাজাপ্রাপ্তদের থানা পুলিশের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ইভিএমে কোনো ভোট হবে না
উল্লেখ্য, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, ষাঁড়, সিএনজি, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন লোভনীয় পুরষ্কার দেবার কথা বলে চাটমোহর, সুজানগর আটঘরিয়া, আতাইকুলা, ঈশ্বরদী, লালপুর, পাবনা সদরসহ আশ পাশের কয়েকটি উপজেলায় লটারীর টিকিট বিক্রি করে সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
টিকিট বিক্রেতা সাজু হোসেন জানান, শনিবার কেবলমাত্র চাটমোহরে ৪০টি অটোবাইকযোগে বিভিন্ন ইউনিয়নে টিকিট বিক্রি চলছিল।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের প্রাণহানি
এ বিষয়ে মেলায় লটারী চালানোর দায়িত্বে থাকা কোরাইশী বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আর সব জায়গা ম্যানেজ করেই লটারী বিক্রি করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, তাঁতবস্ত্র ও কুটির শিল্পমেলার অনুমতি ছিল ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। শনিবার বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ ভেঙে দেয়া হয়েছে। লটারী অনুমতি ছিল না। তাহলে গত এক সপ্তাহ ধরে লটারীর নামে জুয়া খেলা চললো কিভাবে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সান নিউজ/কেএমএল