বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও: রাসায়নিক সার বাইরে বিক্রির প্রতিবাদ করায় ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় ভাড়াটে লোক দিয়ে ৪ ইউপি সদস্যকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বনি আমিনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নিন
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। তবে চার ইউপি সদস্যকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান।
চার ইউপি সদস্যের বরাতে জানা যায়, কয়েকদিন আগে কৃষকরা রাসায়নিক সার নিতে আসলে চেয়ারম্যান তখন তাদের বলেন এই তোরা বাংলাদেশ না পাকিস্তান (আওয়ামী লীগ- বিএনপি) আওয়ামী লীগ হলে সার দিচ্ছে আর বিএনপি হলে চলে সার না দিয়ে চলে যেতে বলেন।
আরও পড়ুন: মাছ চাষ করবে ডিএনসিসি
চেয়ারম্যান তার নেতাকর্মীদের ২০-৩০টা করে সারের বস্তা দিচ্ছে বাইরে বিক্রি করার জন্য। এতে তিনি বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা করে পান। আমরা তখন প্রতিবাদ করি। আমাদের ভিজিডি কার্ড বিতরণের মিটিং ছিলো। আমরা সেই মিটিং এ অংশ নিতে গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান তার কিছু নেতাকর্মী নিয়ে বসে আছেন। এ সময় সাদ্দাম, রশিদুল, তুষার, মিন্টু সহ আরো কয়েকজন আমাদের কে বলে এই তোরা এখানে কেন আসছিস? বের হও পরিষদ থেকে। একথা বলতে বলতে তারা চেয়ারম্যান ও সচিবের সামনে আমাদের মারধর করে বের করে দেয়।
অন্যদিকে গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান বনি আমিন তার পছন্দের প্রার্থী মোশারুল ইসলাম সরকারকে ভোট দিতে বলেন। আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থী দেবাশীষ দত্ত সমীরকে ভোট দিলে তিনি আমাদের খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন ওই টোকাই'র বাচ্চাকে তোদের কে ভোট দিতে বলেছে। তখন থেকেই তিনি ইউপি সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন।
আরও পড়ুন: বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু
ইউপি সদস্য হাফিজুল জানায়, জনগণ সার পায়না।পরিষদে এসে ঘুরে যাচ্ছে আর চেয়ারম্যান তার লোক দিয়ে সকল প্রকার রাসায়নিক সার বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই তিনি লোক দিয়ে হুমকি-ধামকি দেয়। তিনিও যেমন জনপ্রতিনিধি আমরাও জনপ্রতিনিধি। চেয়ারম্যানের সামনেই আমাদের সন্ত্রাসীরা মারলো তিনি একটা কথাও বললেন না। আমরা ইউএনও মহোদয় এর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিবো।
৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা মেম্বাররা হুমকির মুখে আছি। বাইরের লোক এসে প্রভাব খাটাচ্ছে। চেয়ারম্যান কিছুই বলে না। প্রতিবাদ করলেই তিনি বাইরে থেকে লোক এনে হুমকি দেয়। তিনিও খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদের। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো? কে আমাদের বিচার করবে?
আরও পড়ুন: খুবই চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যে আছি
আরেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান বনি আমিন কৃষকদের পাওয়া না রাসায়নিক সার তার লোক দিয়ে বাইরে বিক্রি করে দেয়। আমরা এর প্রতিবাদ করায় আজ সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের মারধর করে পরিষদ থেকে বের করে দেন। আমরা এর বিচার চাই।
তবে ভাড়াটে লোক দিয়ে ইউপি সদস্যদের মারধর ও সার বাইরে বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বনি আমিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তারা আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রে নেমেছে।
এ ব্যপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মোঃ শামসুজ্জামান বলেন, ৪ ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এমআর