গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও ডাক্তারদের অবহেলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। দিনে কোনমতে চিকিৎসাসেবা দিলেও রাত ১২টা বাজলেই ঘুমিয়ে পড়েন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকগণ। তাদের পরিবর্তে চিকিৎসা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। এমন কি ব্যবস্থাপত্রও দেন তারা।
আরও পড়ুন : বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ তরুণ গ্রেফতার
ম্যাটস পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কিভাবে সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দেন তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সম্প্রতি রাত ১২টার সময় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় দায়িত্বরত চিকিৎক ডা. রাজীব হোসেন পাশের একটি রুমে ঘুমিয়ে আছেন। তার পরিবর্তে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন দু’জন ইর্ন্টান।
নবজাতক থেকে সব বয়সী রোগিদের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দেন তারা। এ সময় সদর উপজেলার তুলসীঘাট থেকে চিকিৎসা নিতে আসা তানজিন নামে এক যুবক বলেন, আমার মায়ের প্রচন্ড পেট ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। জরুরি বিভাগে থেকে চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা হাসপাতালে ভর্তি হতে বললেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক কই? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, স্যার রুমে আছেন, আমরাই সব পারি।
শুধু তানজিন নয়, ওই দুই ছাত্রকে দুই নবজাতকসহ অন্তত ৫ জন রোগির চিকিৎসাসহ ব্যবস্থাপত্র দেয়। তখনও দায়িত্বরত ডা. রাজীব হোসেন পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জরুরি বিভাগে আসেন তিনি। ৭ মিনিট একজন রোগির চিকিৎসা দিয়েই আবার ১২টা ৪৭ মিনিটে পাশের রেস্ট রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
আরও পড়ুন : নিখোঁজ বুয়েট শিক্ষার্থীর মরদেহ শীতলক্ষ্যায়
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ইর্ন্টান ছাত্র আমিনুল ইসলাম রংপুর সিটি ম্যাটসের ছাত্র। আরেকজনের নাম সিপন রায়। তিনি বগুড়া টিএমএসএস ম্যাটসের ছাত্র। সব বয়সের রোগিদের চিকিৎসার পাশাপাশি ব্যবস্থাপত্র আপনারা কেন দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমরা বলতে পারব না আমাদের স্যার জানেন।
স্যার কই জিজ্ঞেস করতেই বলেন রুমে আছেন। দায়িত্বরত ডা. রাজিব হোসেনে বলেন, দেখেন রাতে পুরো হাসপাতালের দায়িত্ব আমার উপর। এত কাজ তাই একটু রেস্ট নিচ্ছি। তাছাড়া ইর্ন্টানরা ভালো চিকিৎসা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন : আদালতের নির্দেশ না মেনে জমি দখল, আহত ৫
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. মাহাবুব হোসেন বলেন, জরুরি বিভাগে দায়িত্ব বাদ দিয়ে ডাক্তার ঘুমিয়ে থাকবে এটা কাম্য নয়। তবে রোগি না থাকলে তারা রেস্ট নিতে পারবে। এ রকম কোন ঘটনা ঘটলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়শন (বিএমএ) গাইবান্ধা জেলা শাখার সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ডা. মো. মঞ্জুরুল হাসান বলেন, কোন ডাক্তারের দায়িত্ব অবহেলা করে ঘুমিয়ে থাকা অবশ্যই উচিত না।
আরও পড়ুন : নারায়ণগঞ্জে এসি বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৫
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা দরকার বলে আমি মনে করি। আর ইর্ন্টান ছাত্ররা সব রোগের ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবে না। তবে নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ তারা লিখতে পারবে।
সান নিউজ/এইচএন