নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কাটিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছে মানুষ। সিত্রাংয়ের প্রভাবে হাতিয়াতে কিছু গাছ ভেঙে পড়েছে। এছাড়া ও জোয়ারের পানিতে ৩৫ থেকে ৪০হাজার মানুষ নাানা ভাবে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ৯জনের মৃত্যু
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোর থেকে জেলার ৪০১টি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লক্ষাধিক মানুষ তাদের নিজ গৃহে ফিরে গেছেন। হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জোয়ারের পানি থাকায় এখনো কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে হাতিয়ার সাথে সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ শুরু হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.সেলিম হোসেন। তিনি বলেন, সোমবার বিকেল থেকে গৃহপালিত পশুপাখি ও মালামাল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থান নেয়া অনেক মানুষ ভোরের দিকেই তাদের নিজ গৃহে ফিরে গেছেন। কিন্তু অনেক গ্রামে জোয়ারের পানি থাকা কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো মানুষ রয়েছেন। তারা জোয়ারের পানি নেমে গেলে তারাও বাড়িতে ফিরবেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাসে হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে। এতে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির আমন ফসল ও আড়াই শ হেক্টর জমির উঠতি শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অপরদিকে, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ, তমরদ্দি, নলচিরা, সুখচর, হরণী ও চানন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে গেছে। এতে অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ভারী ঝড়ো হাওয়াতে বসতঘরের টিনের আঘাতে তমরদ্দিতে মেহেদী হাসান (৩২), নলচিরায় গাছের ঢাল পড়ে জগদীশ চন্দ্র দাশসহ (৪০) কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত মেহেদী হাসানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বিকেল ও সন্ধ্যায় উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিলেও তাদের অনেকেই শুকনা খাবার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, জোয়ারের লবণাক্ত পানি উপকূলীয় এলাকার ফসলি ক্ষেতে ঢুকে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ঝড়ো বাতাসে কিছু কাঁচা ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সুবর্ণচর উপজেলায় কিছু পোলট্রি ফার্ম ক্ষতিগ্রসস্থ হয় এবং বসত ঘরের উপর গাছ উপড়ে পড়ে এক শিশুর প্রাণহানি হয়। কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ও চরফকিরা ইউনিয়নের কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,প্রতিটি উপজেলার ইউএনওর মাধ্যমে শুকনা খাবার কেনার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে। হয়তো কোথাও আগে-পরে শুকনা খাবার পৌঁছাতে পারে।
সান নিউজ/এসআই