কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিয়া ও এরশাদ আমলে ঘরের চেয়ে বেশি সময় কেটেছে যার জেলখানায়, যিনি দলের জন্য দান করেছেন নিজের একটা হাত ও একটা চোখ সেই পরীক্ষিত মুজিব আদর্শের সৈনিক মো. ফারুক হোসেনকে ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আদর্শ বিচ্যূত মো. শাহাদাৎ হোসেন যখন বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় মিছিল বের করে তখন বিভিন্ন মহল রাগে-ক্ষোভে- দুঃখে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় বইয়ে দিচ্ছে। শতশত অগ্নিঝরা স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনো আসছে।
আরও পড়ুন: হাতির আক্রমণে বিজিবি সদস্য নিহত
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য মো. খায়ের মিয়া লিখেছেন, “আপনারা আব্দুর রহমান ভাইয়ের বিরোধিতা করতে গিয়ে শেখ হাসিনার প্রার্থী ফারুক ভাইকে হারিয়ে দিলেন! তার মানে আপনারা স্বার্থের জন্যে আওয়ামী লীগ করেন? স্বার্থেরহানি হলে আপনারাও একেকজন মোস্তাক!”
বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তুজা তমাল তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন “নির্বাচনের নামে যারা ফারুক হোসেনের কাছ থেকে আর্থিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন অনতিবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে নিজেদের শুদ্ধ করার চেষ্টাটা অন্তত আপনাদের করা উচিত। চিটারি বাটপারিতো আপনাদের পুরাতন স্বভাব নির্বাচনের কথা বলে টাকা নেন অথচ নিজেদের পকেটে রেখে দেন!!! আর মুখে শুধু বড়ো বড়ো ফাফর কয়েকদিন ধরে মিথ্যা ফাফর শুনতে শুনতে কান দুইটা শেষ!! আর আজকে সারাদিন সেইসব ফাফরবাজির ফল নিজ চোখে দেখলাম এটা ভাবছেন নাতো, এই টাকা দিয়ে শেষ বয়সে হজ্জ্ব করে পাপমোচন করবেন?? আজ আপনাদের মতো ফাফরবাজ চাপাবাজ চিটার বাটপারদের জন্য লাঞ্ছিত, লজ্জিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মীরা!!! তবে একটা কথা মাথায় রাইখেন বাঘে ধরলে ছাড়ে শেখ হাসিনা ধরলে কিন্তু ছাড়ে না মাইন্ড ইট!!
আরও পড়ুন: কিছুটা সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে
গণমাধ্যমকর্মী জাহাঙ্গীর আলম লিখেছেন, ভাইজান এদেরকে বারবার মাফ করে দেওয়া হয় বলেই দলের এ অবস্থা। এরা নিজের স্বার্থের জন্য নেত্রীর বুকে ছুরিও মারতে পারে। অথচ এদের কোন বিচার হয় না। এরা নিজেদের সব থেকে বড় আওয়ামী লীগার বলে দাবি করে, অথচ যতবার নির্বাচন এসেছে ততবারই আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কাজ করেছে। এখন কার দোষ দেবেন? যে অন্যায় করে তার? নাকি যারা এই অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেয় তাদের?
ওবায়দুর রহমান নামের একজন লিখেছেন, ফরিদপুরের আশপাশের সকল জেলায় জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেছে। কারণ তারা সংগঠন হিসেবে এবং নেত্রীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল এবং সেখানে কোন আত্মীয়লীগ নেই। কিন্তু ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ আত্মীয়লীগের কাছে হেরেছে। এই আত্মীয়রা প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনার মনোনীতদের বিরুদ্ধে নিজেকে দাড় করিয়েছে প্রতিপক্ষ হিসেবে এবং চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে শেখ হাসিনাকে।
আরও পড়ুন: ৪২ দিন সব কোচিং সেন্টার বন্ধ
গণমাধ্যমকর্মী জাকির হোসেন লিখেছেন, “বোয়ালমারীর নেতা ও ভোটারা দিনে ফরিদপুর আর রাতে ভাঙ্গা।”
প্রবাসী খন্দকার কমরেড লিখেছেন, ফরিদপুর-১ আসনের এমপি (আমাগো নেতা) এখনো কি স্বপদে আছে, নাকি পদত্যাগ করেছে। ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার ভূমিকা কী?
বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন চৌধূরী লিখেছেন, রাত হলে কান কথা, দিন হলে বক্তৃতা অন্ধকারে চশমা আলোয় আনারস, তাদের নিয়ে বসে নেতা করে রঙ্গরস।
আরও পড়ুন: ইউপি সদস্যকে জবাই করে হত্যা
বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস রাহাদুল আকতার তপন বলেন, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম,এম, মোশাররফ হোসেনের পরীক্ষিত সৈনিক খ্যাত উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতা ও তাঁদের আত্মীয় স্বজনেরা আওয়ামী বিরোধী প্রার্থীর এজেন্ট হিসাবে (পৌর যুবলীগের আহ্বায়কের ভাই) ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেছে। এমন কী তারা বিজয় মিছিল নিয়ে আওয়ামী সভাপতির কার্যালয়ের সামনে উল্লাস করেছে।”
জেলা পরিষদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর বোয়ালমারী উপজেলার ত্যাগী নেতা কর্মীরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠণগুলি ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান। তারা বলেন, এমন নেতাকে দলের পদ-পদবী দেয়া যাবে না, যারা শেখ হাসিনার স্বপ্নকে বিক্রি করে। আবার এমন কোন নেতাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া যাবেনা, যাতে নতুন করে আরেক শাহ মুহম্মদ আবু জাফরের জন্ম হয়।
সান নিউজ/কেএমএল