পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খান। (পুরনো ছবি)
সারাদেশ

ইউএনও’র ওপর হামলার নেপথ্যে যুবলীগ নেতা!

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে গিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহেল ও নৌ-পুলিশের ওপর জেলেদের হামলার নেপথ্যে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খানের হাত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: আগে তারেক মুচলেকা প্রত্যাহার করুক

এ ঘটনায় পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫০/১৬০ জনকে আসামি করে সোমবার (১০ অক্টোবর) জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল বাশার বাদী হয়ে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে এখনও পর্যন্ত বাবুল ফকির ও দীন ইসলাম নামে দুইজন গ্রেফতার হলেও মূলহোতা মনির খানকে এখনও গ্রেফতার হয়নি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, গত শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে ইউএনও কামরুল হাসান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসাইন ও মাঝিরঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কয়েক সদস্য মিলে পদ্মা নদীতে অভিযানে যান। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকার করায় ১১ জেলেকে আটক করা হয়। তখন তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড করা হয়।

আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে ট্রলারডুবি, ৪ লাশ উদ্ধার

এ সময় ইলিশ ধরার জালসহ একটি ট্রলার জব্দ করে ভ্রাম্যমান আদালত। তখন পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খান ওই ট্রলারকে ছাড়ানোর জন্য তদবির করতে আসেন। কিন্তু প্রশাসন তা না শুনে সন্ধ্যার দিকে পদ্মা নদীর মাঝে অভিযানে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাইনপাড়া এলাকায় গেলে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খানের ইন্ধনে জেলেরা মাঝ পদ্মায় আলতাফ খার চর এলাকায় দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ও সুরকি নিয়ে হামলা করে ইউএনও’র ওপর; অন্যদিকে, মনির খান জব্দকৃত ট্রলার নিয়ে ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় জেলেদের হামলা ঠেকাতে আত্মরক্ষার্থে নৌ-পুলিশ ৯টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হামলায় ইউএনও, নৌ-পুলিশ ও মৎস অফিসের কর্মচারী আহত হয়। এ সময় আটক ১০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া জব্দকৃত ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

আরও পড়ুন: নগর পরিবহনের দুই রুট চালু

এ সময় ২লাখ মিটার ইলিশ মাছ ধরার জাল উদ্ধার করা হয়। পরে সোমবার জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল বাশার বাদী হয়ে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫০/১৬০ জনকে আসামী করে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে, এখনও পর্যন্ত বাবুল ফকির ও দীন ইসলাম নামে দুইজন গ্রেপ্তার হলেও মূলহোতা মনির খানকে এখনো গ্রেফতার হয়নি।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সরেজমিন গিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান ও তার ছোটভাই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খান সহ পরিবারের অনেকেই পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি ও ইলিশ মাছ ধরার সিন্ডিকেটের সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে নানানভাবেই জড়িত। তবে এবার নিজেরা ইলিশ ধরার ট্রলার ও জাল নিয়ে নদীতে না নামলেও তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ নিধনে জোরেশোরে নেমেছে। তাই কোনো ট্রলার ধরলেই তদবিরে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: বিশ্ব ইজতেমা শুরু ১৩ জানুয়ারি

এছাড়াও প্রশাসন যাতে ভয় পেয়ে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে না বের হয় এজন্য মনির হোসেন খানের ইন্ধনে ইউএনও কামরুল হাসান সোহেলের নেতৃত্বাধীন টিমের ওপর জেলেরা মাঝ পদ্মায় আলতাফ খার চর এলাকায় দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ও সুরকি নিয়ে হামলা করে। এ ঘটনায় মৎস কর্মকর্তার মামলায় দুইজনর গ্রেফতার হলেও মূলহোতা মনির খানকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা পারিবারিকভাবেই এলাকায় রাজনীতি করি এবং বালুর ব্যবসা করি। এবার মাছ ধরার কোনো কাজে সংশ্লিষ্ট নাই। ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার নাম মামলায় জড়ানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুন: গণধর্ষণের শিকার বিউটিশিয়ান, গ্রেফতার ২

এ ব্যাপারে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় বাবুল ফকির ও দীন ইসলাম নামে দুইজন গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর যুবলীগ নেতা মনির খানের বিষয় ব্যাপক তদন্ত চলছে।

এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান সোহেল বলেন, অভিযানে গিয়ে লক্ষাধিক টাকার জালসহ আটককৃত ট্রলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন খান তদবির করে ছাড়াতে না পেরে আসামি ও জালসহ ট্রলার ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। জেলেরা নিরীহ তাদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র থাকার কথা নয়। হামলায় আমিসহ টিমের অনেকে আহত হই। যতই বাধা আসুক মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চলবেই।

সান নিউজ/কেএমএল

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

লক্ষ্মীপুরে চাষ হচ্ছে সৌদির আজওয়া খেজুর

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: মরুর দেশ সৌদি আরবের বিখ্যাত আজওয়া খেজু...

ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ ও সিটি ক...

আ’লীগকে নির্বাচনে আনতে চাই বলিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আমরা কাউকে নির্বাচনে আনতে চাই, এমনটা বলিন...

কিয়েভে দূতাবাস বন্ধ করলো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিমান হামলার ভয়...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ...

আইপিএলের আগেই নিষেধাজ্ঞায় হার্দিক

স্পোর্টস ডেস্ক: আইপিএলের গত আসর শুরুর আগে রোহিত শর্মাকে সরিয়...

খালেদা-ইউনূসের কুশল বিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সেনানিব...

পথে সড়কে প্রাণ গেল প্রধান শিক্ষকের

জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলার সালথায় স্কুলে যাওয়ার পথে দুই ম...

বহু বছরপর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজি...

২০২৫ সালে স্কুল ছুটি থাকবে ৭৬ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা