সান নিউজ ডেস্ক: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নাটোরের সিংড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন (৫০) নিহত হয়েছেন। এছাড়া সংঘর্ষে আহত হয়েছেন সুকাশ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম এবং প্রতিপক্ষ কুদ্দুস-ফরিদ গ্রুপের অনুসারী মাসুদ, রুহুল ও মুসাসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সালমান খানের মতো পাত্র খুঁজছি
রোববার (১০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষ কুদ্দুস ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং দুই বারের বিএনপি সমর্থিত পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী। কুদ্দুসের ভাই ফরিদ ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
অন্যদিকে, নিহত আফতাব উদ্দিন উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য। তবে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, ২০১৯ সালে আফতাব এবং ফরিদ গ্রুপের মধ্যে এক সংঘর্ষে ফরিদ গ্রুপের মোর্শেদুল ইসলামের পা কেটে দেওয়ার ঘটনায় আফতাব উদ্দিনকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: বাড়ির ছাদ ধসে নিহত ৯
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাবেক ইউপি সদস্য আফতাব ও বর্তমান ইউপি সদস্য ফরিদুলের মধ্যে বামিহাল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আফতাবের নেতৃত্বে তার কয়েকজন অনুসারী বর্তমান ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলামের অনুসারী রুহুল আমিন ও আবু মুসার দোসাপাড়ার বাড়িতে হামলা চালান। এর জেরে কিছুক্ষণ পর রুহুল ও মুসা তাদের লোকজন নিয়ে বামিহাল বাজারে এসে সেখানে থাকা প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
এছাড়া সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় ২০-২৫ জন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। একপর্যায়ে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে লোকজন বাড়িতে চলে যান। এ সময় আফতাব ও আবুল কালামকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আফতাব উদ্দিনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: নিখোঁজ ৩ বান্ধবীর লাশ লাশ
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে পাঁচজনকে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। আহত চার জনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সিংড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। একজন নিহত ও চার জন আহত হয়েছেন। তবে সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির কথা শুনিনি।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবি, নিহত ৭৬
এছাড়া নাটোর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) জামিল আকতার বলেন, ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/কেএমএল