গিয়াস উদ্দিন, নোয়াখালী: নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের চরউরিয়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন নোয়াখালী এগ্রো সার্ভিস প্রদর্শনী কেন্দ্রে নারিকেল বীজ ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বিএনপি
চলতি মৌসুমে বিএডিসি’র উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ ও এগ্রো সার্ভিস সেন্টার কার্যক্রমের আওতাধীন খামার সমূহে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নারিকেল চারা উৎপাদনের নিমিত্তে ২২ হাজার নারিকেল বীজ কৃষক পর্যায় থেকে ক্রয়ের জন্য অর্থ বরাদ্ধ হয়। এতে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতিটি নারিকেল বীজ ৬৮ টাকা দরে ক্রয়ের জন্য বলা হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, এগ্রো সার্ভিস প্রদর্শনী কেন্দ্রের উপপরিচালক নুরুল আলম সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্চামতে কৃষকদের কাছ থেকে উন্নতমানের নারিকেল বীজ সংগ্রহ না করে তিনি নিজেই এবং স্থানীয় সেন্ডিকেটের মাধ্যমে নারিকেলের আড়ৎ থেকে প্রতি পিস ৪৯ টাকা ধরে নিন্মমানের নারিকেল বীজ সংগ্রহ করেছেন। পরে নিন্মমানের নারিকেল বীজের মূল্য প্রতি পিস ৬৮ টাকা নির্ধারণ করে তিনিসহ সেন্ডিকেটের সদস্যরা মোটা অংকের অর্থ লোপাট করে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাইডেনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
চরউরিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী, মাহবুবুর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, আবুল হোসেনসহ একাধিক কৃষক জানান, এখানে কৃষকদের কাছ থেকে নারিকেল বীজ সংগ্রহের কথা বলা হলেও প্রকৃত পক্ষে কৃষকদের কাছ থেকে কোন নারিকেল বীজ সংগ্রহ করা হয়না। এগ্রো সার্ভিস প্রদর্শনী কেন্দ্রের কর্মকর্তারা নিজেদের সেন্টিকেট তৈরী করে কৃষকের ভুয়া তালিকা তৈরী করে নারিকেল আড়ৎ থেকে নিন্মমানের নারিকেল সংগ্রহ করেন। এতে বীজ তলায় নারিকেলের চারা স্বাভাবিক উৎপাদন হয় না। ফলে সরকারের মহৎ লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ শুধু নারিকেল বীজ ক্রয়ে অনিয়ম নয়, এখানে চারা উৎপাদনে সার, কীটনাশকসহ যাবতীয় খরচেও গড়মিল করেন কর্মকর্তারা। এছাড়া সারা বছর চলমান কৃষক প্রশিক্ষণ, উন্নতমানের বীজ, চারা, কলম, সার, কীটনাশক, চত্রাকনাশক, কৃষি বিষয়ক পুস্তিকাসহ অন্যান্য কৃষি পন্য ও উপকরনাদি বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন উপপরিচালক নুরুল আলম। নিজ এলাকার বীজ তলায় নারিকেল বীজ সরবরাহ করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: ডিম আমদানি করবো না
কৃষকের কাছ থেকে নারিকেল বীজ সংগ্রহ না করার বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন নোয়াখালী এগ্রো সার্ভিস প্রদর্শনী কেন্দ্রের উপ-পরিচালক নুরুল আলম বলেন, এখানে নারিকেল বীজ সংগ্রহে প্রতি বছর রাজনৈতিক ছাপ রয়েছে। তাই কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি নারিকেল বীজ সংগ্রহ না করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে নারিকেল বীজ সংগ্রহ করতে হয়। এতে কোন ধরনের অনিয়মে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।
নোয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোশরেফুল হাছান চন্দন বলেন, গত বছর ওই বীজতলায় নারিকেল ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে আমাকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছিল। তখন নারিকেল ক্রয়ের পূর্বে উপপরিচালক সাহেব আমাদের সাথে মিটিং করেছিলেন। এবার আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। তাই এ বিষয়ে আমি অবগত নাই।
সান নিউজ/এমআর