সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
বন্যার জন্য সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ত্রাণের হাহাকার। একদিকে পানিবন্দী, অন্যদিকে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়ায় বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
সরকার থেকে যে দশ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে নগন্য। অধিকাংশ পরিবার ত্রাণের আওতা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এছাড়াও শিশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে ওষুধসহ গোবাদি পশুর খাদ্য সংকট।
কাওয়াকোলা ইউপির নারী আয়েশা ও রমিছা বেগম জানান, পানি ও স্যাঁতস্যাতে এলাকায় থাকার কারণে হাত-পায়ে ঘা দেখা দিয়েছে। রাতে হাত-পায়ের চুলকানি ও জ্বালা পোড়ায় ঘুমাতে পারি না। কাজকর্ম না থাকায় অর্ধাহারে দিন কাটছে।
একই এলাকার নামদার হোসেন জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকটে পেটে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পেটের পীড়াসহ আমাশয় হচ্ছে অনেকের। পানিবন্দী মানুষ ঠিকমতো ওষুধও পাচ্ছে না। এ অবস্থায় বন্যাকবলিতদের চরম দুর্বিসহভাবে জীবন কাটছে। গত ১৫ দিন যাবত সিরাজগঞ্জের ৩৫ ইউনিয়নের প্রায় সোয়া দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
এর মধ্যে চরাঞ্চলের সব পরিবার পানির মধ্যেই জীবন কাটাচ্ছে। কেউ ঘরের চালে খোলা আকাশের নিচে ও কেউবা নৌকায় খোলা আকাশের আবার কেউ ঘরের মধ্যে উচু করে মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছে। কারো ঘরে চাল আছে তো চুলা নেই। আবার কারো ঘরে চুলো আছেতো চাল নেই। বিশুদ্ধ পানি না থাকায় বন্যার পানিতে দিয়েই হাত-মুখ ও বাসনপত্র পরিষ্কার করছে। রান্না-বান্নাও অনেক সময় বন্যার পানি দিয়েই করতে হচ্ছে।
এতে বিভিন্ন রোগবালাই দেখা দিয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ বা শুকনো ও শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হয় নাই। এ নিয়ে বন্যা কবলিতদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তবে কিছু কিছু পরিবারে শুধু দশ কেজি চাউল বিতরন করা হয়েছে। তাও আবার বাড়ীতে নিয়ে ৯ কেজি হচ্ছে। এছাড়াও চরাঞ্চলের ফসলসহ ঘাস তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে। খাদ্য না থাকায় গরু শুকিয়ে যাচ্ছে। ঠিকমতো দুধও দিচ্ছে না।
আবার হাট না বসায় গরুর বিক্রিও করতে পারছে না। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। নৌকা ও কলার ভেলা একমাত্র ভরসা। কিন্তু সবার পরিবারের তা নেই। এ জন্য অনেক পরিবার সার্বক্ষনিক বাড়ীর মধ্যেই পানিবন্দী অবস্থায় থাকবে।
সান নিউজ/ আরএইচ