সান নিউজ ডেস্ক: বিয়ে করার জন্য রাজশাহীর বাড়ি থেকে নাটোরে তরুণ (১৯) প্রেমিককে নিয়ে পালিয়ে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরী এক প্রেমিকা (১৬)। ঘটনার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষক এবং দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে পরাজয়ের মুখে রাশিয়া
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার তেলকুপি নুরানীপাড়া থেকে ওই তিন ধর্ষককে আটক করে। এর আগে রাতেই দুই সহযোগীকে শহরের হাফরাস্তা থেকে আটক করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় জনৈক সাগর মিয়ার ভাড়া বাসায় চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন নাটোর শহরের কানাইখালী মহল্লার আফজাল হোসেনের ছেলে রনি মিয়া, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রকি এবং আব্দুল মজিদের ছেলে সোহান। এছাড়া এ ধর্ষণের ঘটনায় সহযোগিতার অভিযোগে শহরের হাফরাস্তা থেকে মৃদুল হোসেন এবং তার স্ত্রী মিথিলা পারভীনকে আটক করা হয়েছে। তিন ধর্ষকই শহরের চিহিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ এবং মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব জুড়ে বেড়েই চলেছে প্রাণহানি
পুলিশ ও ভিকটিম সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর বিনোদপুর থেকে আবির (২১) নামের এক দোকান কর্মচারী তার এসএসসি পরিক্ষার্থী প্রেমিকাকে নিয়ে নাটোর আসেন বিয়ে করার উদ্দেশ্য। পরে স্থানীয় এক বন্ধু বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় মৃদুল ও মিথিলা দম্পতির বাসায় নিয়ে যান। এই দম্পতি সেসময় রনি, রকি ও সোহানকে ডেকে নিয়ে আসে। বাসায় প্রবেশের পর তারা একপর্যায়ে তরুণকে বেঁধে রেখে দলবদ্ধভাবে ওই ছাত্রীকে গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে তাদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে বলে ভয় দেখায়। পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার প্রেমিকা এবং তার প্রেমিক ছাড়া পেয়ে রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে নাটোর থানায় গিয়ে অভিযোগ করে।
ঘটনার খবর পেয়ে সক্রিয় হয় নাটোর থানা পুলিশ। পরে রাত ১টার দিকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া রাতেই মিথিলা ও মৃদুলকে শহরের হাফরাস্তা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয়। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার ভোররাতে সদর উপজেলার তেলকুপি নুরানীপাড়া থেকে তিন ধর্ষককে আটক করে।
আরও পড়ুন: সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী
নাটোর সদর থানার এস আই জামাল উদ্দীন জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর অভিযোগ পাওয়ার পর পরই রাত প্রায় ১টার দিকে অভিযানে নামে পুলিশ। ধর্ষকদের অবস্থান জানতে পেরে তেলকুপি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ধর্ষকরা ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর মাদক সেবনের আড্ডায় বসে। তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তেলকুপি বিল পার হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশও তাদের পিছু ধাওয়া করে। একসময় তারা দুর্বল হয়ে পড়লে পুলিশ রনি, রকি ও সোহানকে আটক করতে সক্ষম হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, বাসা ভাড়া নেওয়া তরুণ ও কিশোরী দুজনেই রাজশাহী শহরের বাসিন্দা। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে তারা নাটোর শহরে এসে একটি বাসা ভাড়া নেন। ভাড়া নেওয়ার সময় ওই যুগল বাড়িওয়ালার স্ত্রীকে বলেন, তারা বিয়ে করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন। রাতেই তারা বিয়ে করবেন। কিন্তু বিয়ে করার আগেই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/কেএমএল