নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা : জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন বাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদের গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়েছেন এলাকাবাসী। অপরাধের স্বর্গরাজ্য হিসেবে মশিয়ালীকে গড়ে তুলেছিলেন এই তিন সহোদর। তাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল অপরাধী বাহিনী।
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী এলাকায় ট্রিপল হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিলাশবহুল বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ধ্বংসস্ত্তূপে পরিণত ছোট ভাই মিল্টনের বাড়ির নিচতলার টয়লেটের পাশের একটি কক্ষের দেওয়ালে বিশেষভাবে তৈরি গোপন স্থানে ও মূল ফটকের সামনের একটি আধাপাকা পুরোনো কক্ষের মাটির নিচে অস্ত্রগুলো পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী জানান, নিচতলার দেওয়াল ও পুরোনো কক্ষের মাটির নিচে বড় ড্রাম দিয়ে তৈরি গোপন স্থানে মিল্টন বাহিনীর অস্ত্র-গোলাবারুদ রাখা হতো। ওই ঘরের আশপাশে কেউ যেতে পারতেন না। মিল্টন ও তার দুই সহোদর ছাড়া এলাকার আদিলের ছেলে ভ্যানচালক আজিমের যাতায়াত ছিল ঘরটিতে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকাবাসী ঘরটিতে আগুন ধরিয়ে দিলে বের হয়ে পড়ে মাটির নিচে বিশেষভাবে তৈরি অস্ত্র-গোলাবারুদ রাখার গোপন স্থানটি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কানাই লাল সরকার জানান, জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন ট্রিপল হত্যাকাণ্ডে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, সেগুলো অবৈধ। এলাকাবাসী তাদের বাড়িতে অস্ত্র ও গোলাবারদের গোপন স্থানের সন্ধান পেয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন মশিয়ালী এলাকার মৃত হাসান আলী শেখের ছেলে। জাকারিয়া খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ প্রচার সম্পাদক ও জাফরিন খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ সভাপতি।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মশিয়ালী ইস্টার্ন গেটে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিলটনসহ তাদের বাহিনীর আরো ১০/১২ জনের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। সে সময় তিন ভাই স্থানীয়দের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। এতে মশিয়ালী এলাকার মৃত মো. বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০) ও মো. ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মো. সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হলে রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাইফুল মারা যান।
এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে রাত ২টার দিকে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিলটনের বসতবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেন। তারা জিহাদ শেখকে (৩০) গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেন।
এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত জাফরিন, জাকারিয়ার শ্বশুর কোরবান আলী, শ্যালক আরমান ও চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জাকারিয়াকে বহিষ্কার করেছে থানা আওয়ামী লীগ।
সান নিউজ/ এআর