এস এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি: বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠির বাসন্ডা সেতুটি এখন মারত্মক ঝুকিপূর্ন। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। এরমধ্যে ৬ থেকে ৭ শতাধিক ভারী যানবহন চলাচল করে। এই সেতুটিকে ৬ বছর আগে “ঝুকিপূর্ন সেতু” ঘোষনা দেয়া হলেও নতুন করে সেতু নির্মান না করে দেয়া হচ্ছে জোড়াতালি।
আরও পড়ুন: জনগণের সেবা করব
বর্তমানে সেতুটির ওপরের প্লেটেই তালি দেয়া রয়েছে প্রায় ৭ শতাধিক!। অনেক নাট বল্টু নষ্ট হয়ে গেলেও তা আর লাগানো হয়নি। তবে সড়ক বিভাগ বলছে সেতুটি কনক্রিট দিয়ে নির্মান করার জন্য প্রকল্পে অর্ন্তভ‚ক্ত করা হয়েছে।সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসাইন এক বছর পূর্বে সাংবাদিকদের বলেছিলেন ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা বেইলি সেতুটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করার জন্য ডিজাইন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি এটি প্রকল্পেও অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি শিগ্রই নতুন সেতুর নির্মান কাজ শুরু করা যাবে। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন বাসন্ডা ব্রিজ অন্তভূক্ত হওয়া ওয়েষ্টটার্ন ব্রিজ বাংলাদেশ নামের প্রজক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট নামে একটি নতুন প্রজেক্ট এর তালিকভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হবে।স্থানীয়দের অভিযোগ হচ্ছে হচ্ছে বলে ৫ বছর কেটে গেলেও তা আর শুরু হয়নি। সংস্কারের নামে চলছে হরিলুট। নতুন ব্রিজের কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন নিয়মিত এ সেতু ব্যবহারকারিরা। অনেকেই বলছেন বাসন্ডা সেতু সড়ক বিভাগের ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’।
বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীর ওপর আশির দশকে নির্মাণ করা হয়েছিল ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের বেইলি সেতু। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ শতাধিক ভারি যানবহন চলাচল করে। সেতুটি ঝুকিপূর্ন হওয়ায় ছয় বছর আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ন ঘোষনা করে দুই পাশের্^ সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা মানছেননা কেহই। তবে এ সেতু ঝুঁকিপূর্ন যেনেও বিকল্প বাইপাশ সড়ক না থাকায় আতংক নিয়েই পাড়ি দিচ্ছে ভারি যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও নতুন সেতু নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও সেতু বিভাগ। বরং প্রতিবছর সেতু সংস্কারে ব্যয় করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শেষ ছয় বছরেই সেতুটি সংস্কারে ব্যয় হয়েছে অর্ধ কোটির বেশী টাকা।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, সেতুটির কয়েকটি প্লেট পরিবর্তন ও ঝালাইয়ের কাজে গত ছয় বছরে তাদের ব্যয় হয়েছে অর্ধ কোটি টাকার বেশী। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে।স্থানীয়রা জানায়, বারবার মেরামত করা হলেও সেতুটি কয়েক দিনের মধ্যেই ফের যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। নাট-বল্টু খুলে পড়ার পাশাপাশি ফেটে যায় প্লেট। এছাড়া এই সেতুতে ভারী যানবহন উঠলে প্লেটের বিকট শব্দে আশে পাশের বাসাবাড়ীর ঘুমন্ত শিশুরা কেপে উঠে। নিন্ম মানের মালামাল দিয়ে নামে মাত্র কাজ করে বরাদ্ধ হওয়া অধিকাংশ টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে।
যেকোন মুহুর্তেই বিনা নোটিশে সেতু ভেঙ্গে পরলে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়লে ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। এই পথে যাতায়াতকারী যাত্রী, চালক ও এলাকাবাসী অবিলম্বে বাসন্ডা সেতুটি কনক্রিট দিয়ে নতুন করে নির্মানের দাবি জানান।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি সুত্র বলছে জরুরী ব্যবস্থাপনায় সড়ক বিভাগ নিজেদের ব্যবস্থাপনায় পছন্দমত ঠিকাদার দিয়ে এ কাজ করানো হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে বেড়েছে মৃত্যু ও শনাক্ত
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসাইন জানান, জাপান ভিত্তিক জাইকার অর্থায়নে ওয়েষ্টটার্ন ব্রিজ বাংলাদেশ নামে একটি প্রজেক্টে অধিভুক্ত হয়েছিল কিন্তু ওই প্রজক্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই বাসন্ডাসহ ঝালকাঠির বড় ৫টি নতুন ব্রিজ বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট নামে একটি নতুন প্রজেক্ট এর তালিকভুক্ত করার প্রস্তাব যাবে। ১০০ মিটারের বড় ব্রিজ হওয়ায় ব্রিজ ডিজাইন উইং নিজেরা কনসালটেন্ট ষ্ট্যাডি করবে। ব্রিজের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। গত মাসেও কাজ করা হয়েছে। টেন্ডারিং প্রসেস, জরুরী মেরামত ও কোটেশন এর মাধ্যমে সংস্কার কাজ করা হয়।
সান নিউজ/এসআই