নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল : অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে পরিচালিত সরকারি বরিশাল কলেজের নাম ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র নামে করার সরকারি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবি জোরদার হচ্ছে। দ্রুত নামকরণের দাবিতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাস্তবায়ন কমিটি। কলেজের নামকরণ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছেও পৃথক স্মরকলিপি দেওয়া হয়।
রোববার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় মেট্রোপলিন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস এবং দুপুর একটায় বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকারের হাতে বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে ওই স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে সরকারি মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কলেজ নামকরণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল, যুগ্ম আহ্বায়ক কে এস এ মহিউদ্দিন মানিক বীরপ্রতীক, সদস্য সচিব সাইফুর রহমান মিরণ, সমন্বয়কারী স্নেহাংশু বিশ্বাস, কমিটির সদস্য ও বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশান্ত ঘোষ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি নজরুল হক নিলু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাভোকেট এ কে আজাদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি সম্পা দাসসহ অন্যরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবিভক্ত ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব বরিশাল তথা বাংলাদেশের কৃতী সন্তান মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত। তার নামে বরিশাল সরকারি কলেজের নামকরণের দাবিতে কয়েক যুগ ধরে বরিশালের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন করে আসছেন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরণ মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে করে গেজেট নোটিফিকেশন জারি হওয়া অনেকটা এগিয়ে গেছে। এটা বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও দাবির স্বীকৃতিও বটে। তাই অবিলম্বে এই প্রস্তাবনার বাস্তবায়ন হওয়া উচিত।
পাকিস্তান সরকারের আমলে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনটি সরকার অধিগ্রহণ করে। তিনি সর্বদা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন বলে তার বাসভবনে ব্রজমোহন কলেজের কসমোপলিটন ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সালে তার বাসভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বরিশাল নৈশ মহাবিদ্যালয়’। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নৈশ কলেজটি প্রথমে বরিশাল দিবা ও নৈশ কলেজে রূপান্তরিত হয়। পরে এটির নামকরণ করা হয় ‘বরিশাল কলেজ’। ১৯৮৬ সালে জাতীয়করণ করা হলে কলেজটির নতুন নাম হয় ‘সরকারি বরিশাল কলেজ’। ১৯৯০ সালে অশ্বিনী কুমারের বাসভবনটি ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলা হয়।
বর্তমান জেলা প্রশাসকের কাছে সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে সরকারি মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কলেজ নামকরণের একই দাবি করা করা হলে বিষয়টির তদন্ত করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছেন তিনি। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে নীতিগতভাবে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি করা হয়েছে স্মারকলিপিতে।
সান নিউজ/ এআর