সারাদেশ

গাছের সাথে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন

শওকত জামান, জামালপুর: গাছের সাথে বেঁধে মাহমুদা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করেছে শশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার পর নির্যাতিতার গৃহবধূর স্বামী, ভাসুর ও তাদের স্ত্রীরা পলাতক রয়েছে।

এই বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মালিরচরের জিগাতলা গ্রামে।

স্থানীয়রা জানায়, ১২ বছর আগে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমাছ আলীর ছোট ভাই আসাদুল হক ও দেওয়ানগঞ্জের ঝাউডাঙ্গা গ্রামের মাহজন মিয়ার মেয়ে মাহামুদা আক্তার বিয়ে হয়। বছর ৩ আগে আসাদুল সৌদি আরবে চলে যায়। মাস খানেক আগে আসাদুল দেশে ফিরে এসে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী মাহমুদার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ২৩ আগষ্ট আসাদুল তার স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে রেখে আসেন। নানাভাবে মাহমুদা শুনতে পায় তাকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘর রক্ষার জন্য আজ সোমবার দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে ছুটে আসেন। আসার পর আসাদুলের ভাই বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমাস আলীর নির্দেশে গৃহবধূ মাহমুদাকে গাছের সাথে বেঁধে তার স্বামী আসাদুল ও তিন জা মিলে অমানুষিক শাররিক নির্যাতন চালায়।

পরে গাছের সাথে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।

খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ মাহমুদাকে উদ্ধার করে ও নির্যাতনের অভিযোগে বড় জা শীলা বেগমকে আটক করা হয়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে স্বামী আসাদুলসহ বাকি নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়।

নির্যাতিতা গৃহবধূ মাহমুদা বেগমের মা মনোয়ারা বেগম জানান, মেয়ের সুখের জন্য ৫ লাখ খরচ করে মেয়ে জামাই আসাদুলকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে। বিদেশে গিয়ে সমস্ত টাকা পয়সা বড় ভাই ও ভাবিদের নামে পাঠিয়ে দেয় আসাদুল। মাহামুদার নামে মাত্র প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা হাত খরচ দিত। দেশে ফিরে অহেতুক সন্দেহ করে মাহামুদার সাথে খারাপ আচরনসহ মানুসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। আজ শ্বশুর বাড়িতে ফিরে গেলে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে আসাদুল ও তার ভাই ও তাদের স্ত্রীরা। আমার মেয়ে নানা অত্যচার সহ্য করে সংসার করে আসছিল। নির্যাতনের পর তাদের অপরাধ ঢাকতে আমার মেয়ের নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। আমার মেয়ে এমন না, খুবই সহজ সরল ধর্যশীল বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অসহায় এই মা।

এ বিষয়ে আসাদুলের ভাই বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমাস আলী ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ছোট ভাই এর স্ত্রী মাহামুদা বেগম বাড়িতে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে নিবৃত্ত করতে গাছে সাথে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় একটি তালাক নামাও দেখানো হয়েছে। আমার পরিবারের কেউ নির্যাতন করেনি।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফ উদ্দিন জানান, ঘটনা শোনার সাথে সাথে গৃহবধূকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় শীলা বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সান নিউজ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ঈদের পরে পর্যটন কেন্দ্রের হালহাকিকাত

বিনোদন প্রতিবেদক: রমজান মাসে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রায় সুনসান নীরব...

বিমসটেক সম্মেলনের পথে প্রধান উপদেষ্টা

সান ডেস্ক: এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ...

সমাজে এখনও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল এ...

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসে...

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা