সান নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুরের গাবসারা ইউনিয়নের রুলীপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ সরকারি ওষুধ ডোবায় পেয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন : তিস্তার পানি বণ্টন ভারতের ওপর নির্ভর
গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) ভূঞাপুরের গাবসারা ইউনিয়নের রুলীপাড়ার রেহাই গাবসারা কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশের একটি ডোবা থেকে ওষুধগুলো উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, সরকারি ওষুধ পাওয়ার ঘটনায় তদন্তের জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
রেহাই গাবসারা গ্রামের অধিবাসী বাবু ও রহিম জানান, শুক্রবার সকালে ক্লিনিকের পাশের একটি ডোবায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেই। পরে ইউপি চেয়ারম্যান এসে ওষুধগুলো উদ্ধার করে ইউপি সদস্যের কাছে জমা দেন।
আরও পড়ুন : রাশিয়া যাচ্ছেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান
গ্রামের আরেক অধিবাসী জমিলা খাতুন জানান, ‘অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে ক্লিনিক। এক দেড় মাইল হেঁটে এসে ওষুধ না পেয়ে চলে যেতে হয়েছে। অথচ গরীবের ওষুধ পাওয়া যায় ডোবার মধ্যে।’
কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন বাড়ির রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘ক্লিনিকে গেলেই বলে ওষুধ আসে না। সরকার ওষুধ দেয় না। তাহলে এত ওষুধ পাওয়া গেলো কেমনে? ওষুধগুলো পেলে গরীব মানুষের কত উপকার হতো!’
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী নুরুল ইসলাম ভূঞাপুর শহরে থাকেন। চরের ক্লিনিকে মাঝে মধ্যে আসেন। রোগীদের ঠিকমতো ওষুধ দেন না। ওষুধের জন্য গেলে সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই বলে ফিরিয়ে দেন। ওষুধ জমাতে জমাতে সেগুলোর মেয়াদ শেষ হলে তার লোকজন দিয়ে ডোবায় ফেলে দেন।
আরও পড়ুন : বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান, নিহত ১৩শ
কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সরকারী নূরুল ইসলাম নুরু বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো কমিউনিটি ক্লিনিকের না। ক্লিনিক থেকে অনেক দূরে একটি ডোবায় পাওয়া গেছে। তবে বেশি ওষুধ সেখানে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকে আমি ছাড়াও আরও দুইজন নারী দায়িত্বে রয়েছেন।’
গাবসারা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খোরশেদ মিয়া বলেন, ‘ডোবায় সরকারী ওষুধ পাওয়া গেছে সংবাদ পেয়ে গিয়ে দেখি বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পড়ে আছে। পরে ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী নুরুল ইসলামকে ওষুধগুলো না দেওয়ায় তর্কাতর্কি করে চলে যান।
আরও পড়ুন : মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ
পরে চেয়ারম্যান ওষুধগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার পর আবার স্বাস্থ্য সহকারীকে ফিরিয়ে দিতে বলে। কিন্তু চেয়ারম্যানকে লিখিত দিয়ে ওষুধগুলো নেওয়ার কথা বললে তিনি আর কোনো কথা বলেননি।’
গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম আকন্দ শাপলা বলেন, ‘গাবসারা ইউনিয়নে চারভাগের মাধ্যমে একভাগ ওষুধ পাওয়া যায়। সেখানে এত ওষুধ কীভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ হলো এবং সেগুলো ডোবায় পাওয়া গেলো? ওষুধগুলো গরীবদের না দিয়ে সেগুলো জমা করে রাখা হয়েছিল। পরে ওষুধগুলো স্থানীয় মেম্বারের কাছে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন : স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা
স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সোবহান হোসেন বলেন, ‘ওষুধ পাওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে খুব দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তবে ওষুধগুলো কীভাবে ওখানে গেলো বা কোন ক্লিনিকের, সেটা বলা যাচ্ছে না। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার মূল তথ্য বেরিয়ে আসবে।’
সান নিউজ/এইচএন