সান নিউজ ডেস্ক: নাটোরের বড়াইগ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে ইঁদুর মারা ট্যাবলেট খেয়ে এক দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন। ঋণের চাপে তারা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উপায়ন্তর না দেখে তারা একসঙ্গে ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: ওআইসি মহাসচিবের ঢাকা সফর স্থগিত
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার হালদারপাড়ায় এই বিষ খাওয়ার ঘটনা ঘটে। ট্যাবলেট খাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর মারা যান স্ত্রী (২৪) আর রাত ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তার স্বামী। (৩৫)।
নিহতের নাম বিথী খাতুন (২৪) ও তার স্বামী ফারুক হোসেন (৩৫)। ফারুক বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কালিকাপুর মহল্লার ফল ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিনের ছেলে। বিথী-ফারুক দম্পতির দেড় বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি, লাদেন গ্রেফতার
জানা গেছে, মাঝে মাঝে ফারুক তার বাবার দোকানে বসতেন। অন্য কোনও কাজ তেমন একটা না থাকায় তিনি সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। বাবা কিছু টাকা দিলে তা নিয়েই খেয়ে না খেয়ে তাদের চলতো। এতে ঋণ ও সুদের চাপে দিশেহারা পড়েন তারা।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হালদার পাড়ার ভাড়া বাসায় তারা উভয়ে একসাথে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে কালিকাপুর গুচ্ছগ্রামের বাবার বাড়িতে যায়। সেখানে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাদেরকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পথে স্ত্রী বিথী’র মৃত্যু হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী ফারুক মারা যান।
আরও পড়ুন: মিছিলে ইসরাইলি সেনাদের গুলি
বিথী-ফারুক দম্পতির আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার হালদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় ওই ট্যাবলেট খায় ওই দম্পতি। এরপর তারা কালিকাপুর গুচ্ছগ্রামে বাড়িতে পৌঁছে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বিথীর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফারুককে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, জানান, ফারুকের দুটি সংসার। সে ছোট স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতেন। ঋণের দায়ে তিনি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উপায়ন্তর না দেখে তারা একসঙ্গে ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেফতার
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বনপাড়া পৌর শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র সমবায় সমিতি গড়ে তুলে সুদের রমরমা ব্যবসা শুরু করেছে অসাধু ব্যক্তি ও কতিপয় প্রতিষ্ঠান। এর পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে তথা সুদের কারবারিদের দৌরাত্ম বেড়েছে। এর জেরে গত ৪ আগস্ট ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে নিজ গলা কেটে আত্মহত্যা করেন উপজেলার বনপাড়া পৌরশহরের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম সোহেল (৩৪)।
সান নিউজ/কেএমএল