এস এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. রুহুল আমিন বিরুদ্ধে রায়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে নানাভাবে হয়রানি ও অপদস্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন সহকারী শিক্ষিকা মৌসুমি সুলতানা মিলি। এ ঘটনায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছে তার স্বামী হাসান আল মামুন। এরআগে সোমবার দুপুরে শিক্ষা অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান ওই শিক্ষিকার স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় তারা শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তিমূলক বদলির দাবি করেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়
ওই শিক্ষিকার স্বামী হাসান আল মামুন অভিযোগ করেন, ২০২০ সালে বাচ্চ মারা যাওয়ার পর আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই সময় দেড় বছর মেয়াদি বুনিয়াদি ডিপিএড (ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণ তালিকায় আমার স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেন শিক্ষা কর্মকর্তা। এরপর নাম কর্তন করতে সাড়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ডিপিএড তালিকায় আবারও তার স্ত্রীর নাম দিয়ে আরো সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে নাম কর্তন করেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ছুটি মঞ্জুরের জন্য তিনি বিভিন্ন সময় ঘুষ দাবি করেন। দাবিকৃত ঘুষ না দেয়ায় এখন নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অন্য স্কুলে ডেপুটেশনে পাঠানোর পায়তারা করছে। সেখানেও টাকা খাওয়ার ধান্ধা করছে শিক্ষা কর্মকর্তা। এতে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে আমার স্ত্রী। এভাবে হয়রানি চলতে থাকলে আমার স্ত্রীর পক্ষে চাকুরি করা সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেল লিটারে বাড়ল ৭ টাকা
ওই শিক্ষিকার শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব চৌধুরী বলেন, 'অবৈধভবে টাকা-পয়সা গ্রহণের ধান্দায় শিক্ষা কর্মকর্তা ধারাবাহিকভাবে পুত্রবধূকে হয়রানি করছে।'
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. রুহুল আমিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ওই শিক্ষিকার নাম ডিপিএড তালিকায় দেয়া হয়। পরবর্তীতে তার অসুস্থতার কারণে নাম কর্তন করা হয়। এখানে কোন আর্থিক লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, আমি কোনো রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। উপকার করে আমি এখন দোষি হয়েছি।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সাংগাইয়ে ৩০ সেনা নিহত
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে মাইনর (ক্ষুদ্র) মেরামতের জন্য নলছিটি উপজেলার ৮৩টি বিদ্যালয়ের বিপরীতে ২ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু নীতিমালা অনুযায়ী এ প্রকল্পের কাজ ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে বরাদ্দ করা সব টাকা ছাড় নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। জুলাই মাসের মধ্যভাগে ওই স্কুলগুলোতে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
সান নিউজ/এমআর