এস.এম শাহাদৎ হোসাইন: অন্যের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে অসহায় বৃদ্ধা জোবেদা বেগমকে। তার বয়স ৮৫ ছুঁইছুঁই। তরে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল তথ্যে তিনি ছেলের চেয়ে তিন বছরের ছোট। বয়সের ভুলে বাতিল হয়েছে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড। শেষ জীবনে এসে ভাতা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
আরও পড়ুন: বর পছন্দ না হওয়ায় নববধূর আত্মহত্যা
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের চেয়ে বড় ছেলেকে তিন বছরের বড় দেখানো হয়েছে। আর আরেক ছেলে মায়ের চেয়ে মাত্র এক বছরের ছোট।
জানা যায়, উপজেলার পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের গোলজার হোসেন চৌকিদার কয়েক বছর আগে মারা যান। এরপর তার নামের বয়স্ক ভাতার কার্ডটি বরাদ্দ পান তার স্ত্রী জোবেদা বেগম। প্রায় ৫ বছর ভাতার অর্থ উত্তোলন করেন তিনি। চলতি বছরে অনলাইনে ডাটাবেজ করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কম থাকায় বাতিল হয়ে যায় তার ভাতার কার্ডটি। ফলে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তার। জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃদ্ধা জোবেদা বেগমের জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১০ মার্চ ১৯৬৫। আর তার বড় ছেলের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ৫ এপ্রিল ১৯৬২।
আরও পড়ুন: ট্রাকচাপায় পুলিশ সদস্য নিহত
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী ছেলে আব্দুল জোব্বার তার মায়ের চেয়ে প্রায় ৩ বছরের বড়। আরেক ছেলে জয়নাল মিয়ার জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১৩ জুন ১৯৬৬। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী মায়ের চেয়ে ছেলে জয়নাল এক বছর তিন মাসের ছোট। বয়সের এমন পার্থক্য সংশোধন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পরিবারটিকে। নানা কাগজপত্র জমা দেওয়ার বেড়াজালে পড়েছে তারা। যার ফলে বয়স কম-বেশির কারণে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বৃদ্ধা জোবেদা বেগম বলেন, মোর বয়স একশ হবার নাগছে। কখন মরম তার ঠিক নাই। মোর কার্ডখেন করি দেও ফির। মুই আর কিচ্চু চাম না।
আরও পড়ুন: বর পছন্দ না হওয়ায় নববধূর আত্মহত্যা
জোবেদা বেগমের বড় ছেলে আব্দুল জোব্বার বলেন, মোর তো বয়স ৬৫ হইছে। মার বয়স ৮৫ হলেও কার্ডে ভুল করে ৫৬ বানাইছে। এটা কোনো কথা হলো। তার জন্য মায়ের ভাতার কার্ডটা বাতিল হইছে। দৌড়ঝাঁপ করছি মেলা। এ কাগজ চায়, সে কাগজ চায়। সেগুলো কোনটে পামো। তাই মার বয়স ঠিক করবের পাই নেই।
সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, প্রথম দিকে ২০০৮ সালের ডাটা এন্ট্রিতে এমনটা হতে পারে। তবে সংশোধনীর আবেদন করলে বয়স ঠিক করা যাবে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভে প্রবাসীর আত্মহত্যা
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক রায় বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে নির্ধারিত বয়সের কম হওয়ায় অনলাইনে ডাটা না নেওয়ায় তার বয়স্ক ভাতার কার্ডটি বাতিল হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হলে পুনরায় তার ভাতার কার্ড ইস্যু করা হবে।
সান নিউজ/কেএমএল