বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও সদর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের হলরুম এখন আয়শা জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিককে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ কারণে মূল ভবনটি সাধারণ মানুষের কাছে হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি পেতে চলেছে। এতে বিরূপ মন্তব্য করছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।
আরও পড়ুন : মানুষের কষ্ট লাঘবে চেষ্টা করে যাচ্ছি
চলতি আগস্ট মাস থেকে এক লাখ টাকা জামানত নিয়ে মাসিক ১৮ হাজার টাকায় রুমটি ভাড়া দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুবোধ চন্দ্র রায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের টাংগন নদীর তীরে অবস্থতি ৩তলা বিশিষ্ট্ ভবনটির নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার অধিকাংশ দোকানঘর তালাবদ্ধ।বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তা ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করছেন ।
আর তৃতীয় তলা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হলরুম কথা মিলনায়তন। সেখানে সভা, সমাবেশসহ বিশেষ দিবসগুলোতে অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কিন্তু সেই হলরুমটি এখন বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন : সুইস রাষ্ট্রদূতকে হাইকোর্টে তলব
এ বিষয়ে জেলার বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে মন্তব্য জানতে চাইলে তারা বলেন, ভবনের তিন তলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বসার পরিবেশ ও সভা সেমিনারের জন্যই সরকার ডিজাইন করে ভবনটি নির্মান করে।
তবে সেখানে বে-সরকারি হাসপাতাল ভাড়া দেয়ায় সভা সমাবেশ করা যাবে না। অন্য কোথাও করতে হবে। যারা দায়িত্বে আছেন তারাই ভাল জানেন হাসপাতাল ভাড়া দেয়া ঠিক হয়েছে কি না।
স্থানীয়রা বলছেন, একটি ক্লিনিক বা হাসপাতাল ভাড়া দেয়ার আগে এলাকার পরিবেশ নিয়েও ভাবার প্রয়োজন ছিল। যেহেতু ভবনটি সম্মানী ব্যক্তিদের তাই তারা এ বিষয়ে আরেকটু ভেবে দেখতে পারতেন।
আরও পড়ুন : সহসায় কমছে না তেলের দাম
আর কমপ্লেক্স ভবনের নীচতলা ও উপর তালায় দোকান ভাড়া নেয়া প্রশান্ত কুমার ও বিধান দাসসহ কয়েকজন জানান, হাসপাতাল ভাড়া দেয়ার কারনে এলাকার পরিবেশ নস্ট হবে। এছাড়া ভবনের তৃতীয় তলায় রুফটপ নামে একটি ফাস্টফুড ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন।
তারা প্রবেশের সময় যদি দেখেন হাসপাতালে রোগীদের কান্না বা রক্তাক্ত অবস্থায় রোগীরা উঠানামা করছেন তাহলে তারা কিভাবে সেখানে যাবে এটাই প্রশ্ন থেকে যায়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারাও তো সেখানে আর সভা সমাবেশ করতে পারবেন না। তাই হলরুমটি ভাড়া দেয়া কোন ভাবেই ঠিক হয়নি।
আরও পড়ুন : সরকার তেলের দাম বৃদ্ধি করেনি
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ জানান, সব জায়গায় হাসপাতাল স্থাপনের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগবে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে দ্রুত সময়ে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুবোধ চন্দ্র রায় জানান, অর্থের প্রয়োজন মেটাতে হলরুমটি হাসপাতালকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সভা সমাবেশ অনত্রে করা হবে।
আর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট প্রশাসক আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, ভাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাগন। তবে আমাকে অবগত করেছেন।
সান নিউজ/এইচএন