সান নিউজ ডেস্ক: ‘মন্তব্য কখনও গন্তব্য ঠেকাতে পারেনা’ মন্তব্য করে ভাইরাল অসম প্রেমের গন্তব্য ঠেকে গেল। নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করে ভাইরাল হওয়া খুবজীপুর ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা খায়রুন নাহার এখন কেবলই ইতিহাস। ছাত্র মামুনকে বিয়ে করে সুখের সংসার গড়া খায়রুন নাহারের সংসার মাত্র ছয় মাসেই জীবনের বিনিময়ে পরিসমাপ্তি ঘটলো। ভাইরাল সহকারী অধ্যাপিকা খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যা নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে সেটা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ভারতকে উপেক্ষা, শ্রীলঙ্কার বন্দরে চীন
রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী মামুনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। মামুন-নাহার দম্পতি নাটোর শহরের বলারীপাড়ার হাজি নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলায় ভাড়া থাকতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে স্বামী মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার শেষ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন তার বাসায় গিয়ে খায়রুন নাহারের লাশ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। তারা মামুনকে বাসার মধ্যে আটকে পুলিশে খবর দেন।
আরও পড়ুন: শুটিংয়ে যৌন হেনস্তার শিকার মিম
নান্নু মোল্লা ম্যানশনের প্রহরী নিজাম উদ্দিন জানান, গতকাল শনিবার রাতে মামুন-খায়রুন দম্পতির বাসায় শুধু তারাই ছিলেন। রাত দুইটার দিকে মামুন তার কাছ থেকে প্রধান ফটকের চাবি নিয়ে বাইরে যান। ভোর ছয়টার সময় বাসায় ফিরে আসেন এবং সাতটার সময় তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, খায়রুনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে গলায় দাগ আছে। ড্রয়িংরুমের সিলিং ফ্যানে একটুকরা পোড়া কাপড় দেখা গেছে। কাপড়টির কিছু অংশ মেঝেতেও পড়ে ছিল। পোড়া কাপড়ের ব্যাপারে তিনি ভোরে মামুনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি শোবার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের রুমে শব্দ শুনে এসে তিনি তার স্ত্রীকে ঝুলতে দেখেছেন। ওড়না খোলার জন্য তিনি তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত টাকা আদায়, জরিমানা
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ। তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের তদন্ত পর এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে হত্যা আর আত্মহত্যা যাই হোক না কেন এমনটি ঘটল, তা পুলিশ বিস্তারিত খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, খাইরুন নাহার (৪০) গুরুদাসপুর খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং মামুন (২২) নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের প্রথমে বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাঘায়। সেখানে তার এক সন্তানও রয়েছে। তবে পারিবারিক কলহে বেশি দিন টেকেনি সে সংসার। তারপর কেটে যায় অনেক দিন। এর মাঝে ফেসবুকে পরিচয় হয় মামুনের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে প্রেমিক যুগলকে নির্যাতন
মামুনের বাড়ি একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন তাদের প্রথম পরিচয়। তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন। তবে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে তাদের বিয়ের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সান নিউজ/কেএমএল