সান নিউজ ডেস্ক: লালমনিরহাট সদর উপজেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল প্রথম আলোর সাংবাদিক আবদুর রব, যমুনা টিভির সাংবাদিক আনিছুর রহমান, এখন টেলিভিশনের সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম ও যমুনা টিভির ক্যামেরা পারসন আহসান সাকিবের ওপর হামলা করেছে। এ সময় ক্যামেরা, ট্রাইপড ও হেলমেট কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা।
আরও পড়ুন: আমাকে দেখে কি বুড়ো মনে হয়?
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সাকোরপাড় দিনাদুলি গ্রামে এক পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আজিজুর রহমান মণ্ডলের ছেলে সাহেব মণ্ডলের (৩৮) নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতির সিন্দুরিয়া গ্রামের বদরুল হাসানের স্ত্রী লাভলী বেগমকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুরের ছেলে সুলতান হোসেন মণ্ডল ৭ আগস্ট রাতে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সুলতান হোসেন ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। ওই ঘটনায় লাভলীর স্বামী বদরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে গিয়েছিলেন ওই চার সাংবাদিক। এ বিষয়ে সুলতানের বাবা আজিজুরের বক্তব্য নিয়ে ফেরার পথে তার ছেলে সাহেব মণ্ডলের নেতৃত্বে হামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: সমান তালে চলছে আক্রান্ত ও সুস্থতা
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আনিছুর ও মাহফুজুলের অবস্থা গুরুতর। আনিছুরের কপালে ও মাহফুজুলের বাঁ হাতে ক্ষত হয়েছে। আনিছুরকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে হামলার পর অভিযুক্ত সাহেব মণ্ডল এলাকাছাড়া। এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হামলার বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমান মণ্ডলের মুঠোফোনেও যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কমছে জ্বালানি তেলের দাম
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে আহত সাংবাদিকদের দেখতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান। তিনি আহত সাংবাদিকদের খোঁজখবর নেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
আরও পড়ুন: সেই চিকিৎসক হত্যার নৈপথ্যে পরকীয়া
হামলার কথা শুনে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলু রাতে হাসপাতালে এসে আহত সাংবাদিকদের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু বিএনপি নয়, সাংবাদিকদেরও নিরাপত্তা নেই। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীরা এখন দানবে পরিণত হয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জানতে চাইলে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সান নিউজ/কেএমএল