ফরহাদ হোসাইন, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করে। এরপর ওই ভিডিও ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন কলেজ ছাত্রীকে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত করেছে কমলেন্দু রায় নামের এক স্কুল শিক্ষক।
আরও পড়ুন: দেশের মানুষ বেহেস্তে আছে
উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায়।
এ ঘটনায় শিক্ষক কমলেন্দু রায়ের কবল থেকে মেয়েকে বাঁচাতে এবং ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে নিরুপায় হয়ে গত ৭ আগস্ট নীলফামারী আদালতে মামলা দায়ের করেছে অসহায় ছাত্রীর পরিবার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, “দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায় বিয়ের প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন ধরণের প্রলোভনে আকৃষ্ট করে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী (ছদ্দনাম) অপর্ণার সাথে অন্যায় প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে ওই কলেজ ছাত্রীর সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করেন স্কুল শিক্ষক। পরে সেটি নিজের মোবাইল ফোনে গোপনে নীল ছবির ভিডিও ধারণ করে লালসার শিকার বানিয়ে ওই ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন স্কুল শিক্ষক কমলেন্দু রায়।”
আরও পড়ুন: ইউক্রেন থেকে গম রফতানি শুরু
ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী জানায়, “দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির পর থেকেই শিক্ষক কমলেন্দু রায় আমাকে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে ও স্কুল ছুটির পর ক্লাসরুমে অপেক্ষা করতে বলে। আমি কমলেন্দু স্যারের কথামত শ্রেণীকক্ষে থাকি। পরে স্যার আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এসময় স্যার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেন। পরবর্তীতে তিনি (কমলেন্দু) বিভিন্ন সময়ে আমাকে জোর করে জড়িয়ে ধরে মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে । সেই ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে।”
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চায়
এদিকে ভুক্তয়োগী কলেজ ছাত্রীর বাবা দিলীপ কুমার রায় বলেন, “আমার মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায় তাকে ফাঁদে ফেলেছে। সে আমার মেয়ের নীল ছবির ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেছে। সে একজন নীল ছবি নির্মাতা। এখন আমরা আমাদের মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে হতাশায় ভুগছি।"
নির্যাতিতার আইনজীবী বলেন, “২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধীত/০৩) এর ৯ (১) এবং তৎসহ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফী আইনের ৮ (১) (৩) (৭) ধারায় বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ভিকটিমের বাবা দিলীপ রায়।”
আরও পড়ুন:শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাড়তে পারে ছুটি
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কমলেন্দু রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করলেও, পরে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
দক্ষিণ পাইটকাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী শুসেন রায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “ভুক্তভোগী পরিবার থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সহায়তায় বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
বিষয়টি নিয়ে জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, “বিষয়টি আমি আগে আফসা আফসা শুনেছি। ভুক্তভোগীর বাবার মাধ্যমে একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সান নিউজ/এমআর