সান নিউজ ডেস্ক : গোলাম নবী ২০১৮ সালে সৌদি আরব ও ভারত থেকে প্রায় ১০ প্রজাতির ২০০ সৌদি খেজুরের চারা সংগ্রহ করেন। এরপর চারাগুলো নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের মাঝদিঘা এলাকায় প্রায় ছয় বিঘা জমিতে রোপণ করে পরিচর্যা করতে থাকেন। ওই গাছের গোড়া থেকে নতুন চারা গজালে সেগুলোও রোপণ করেন। বর্তমানে তার বাগানে তিন বছরের অধিক বয়সী ১০০টির বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। এ ছাড়াও তিন বছর ও আড়াই বছরের গাছ রয়েছে।
আরও পড়ুন : সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার তথ্য না চাওয়ার কারণ জানতে চান হাইকোর্ট
গাছ রোপণের চার বছরের মাথায় সাফল্য পেয়েছেন গোলাম নবী। গাছে গাছে ঝুলছে আজোয়া, বারহী, শিশির, সুককাইসহ অন্তত ১০ প্রজাতির খেজুর।
জানা গেছে, ৫-৬ বছরে ওইসব খেজুর গাছে ফল আসার কথা থাকলেও গত বছর কয়েকটি গাছে খেজুর আসে। এ বছর প্রায় ৮০টি গাছে খেজুর এসেছে। আগামী বছরে সব গাছে খেজুর আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গাছ থেকে খেজুর সংগ্রহ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে শুরু করেছেন গোলাম নবী।
নাটোর হর্টিকালচার সেন্টার ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, মরুভূমির এই খেজুর নাটোরে আশা জাগিয়েছে। এটিকে আরও পর্যবেক্ষণে রাখলে বাণিজ্যিকভাবে চাষের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। পরিকল্পিত গবেষণার পর এ দেশের মাটিতে আরবের খেজুর চাষাবাদ করা গেলে এটিও হতে পারে অন্যতম লাভজনক ফসল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাছে গাছে সৌদি খেজুর ঝুলছে। ওই বাগানে গোলাম নবী ছাড়াও বেশ কয়েকজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদেরকে খেজুর ও গাছের পরিচর্যা করতে দেখা যায়।
কৃষি উদ্যোক্তা গোলাম নবী বলেন, কাঁচা খেজুরের স্বাদও মিষ্টি। এরপর ওই খেজুরের রং হলুদ হলেই সেগুলো সংগ্রহ করে বাজারজাত করা যায়। ইতোমধ্যে খেজুরগুলো সংগ্রহ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো শুরু করেছি।
তিনি জানান, আজুয়া, বারহী, শিশির, সুককাইসহ অন্তত ১০ প্রজাতির খেজুর ৮০টি গাছে ৫-৬টি করে থোকা এসেছে। প্রতিটি গাছ থেকে ৮-২০ কেজি পর্যন্ত খেজুর পাওয়া যাবে। সাধারণত একটি পরিণত গাছ ৫০-৬০ বছর ফলন দেয়। গত বছর যে ১০-১৫টি গাছে খেজুর এসেছিল, সেগুলো তারা নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি মেহমান, পরিচিতজন ও অনেক প্রতিবেশীকে দিয়েছেন। ওই গাছগুলোর খেজুর বিক্রি করে তিনি দীর্ঘমেয়াদি লাভের আশা করছেন।
বাগানের শ্রমিক মো. রতন আলী বলেন, আমি গত চার বছর ধরে কাজ করছি। সব সময় খেজুর গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হয়। যাতে গাছে কোনো পোকার আক্রমণ কিংবা রোগ না হয়, সেজন্য প্রতিনিয়তই পর্যবেক্ষণ করতে হয়।
শ্রমিক রুবেল হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেজুর গাছের যত্ন নিই। সব সময় নজর রাখতে হয়।
আরও পড়ুন : ঢাকা-দিল্লি প্রতিরক্ষা সংলাপ বৃহস্পতিবার
নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর ফিরোজ গণমাধ্যমকে জানান, রমজান ছাড়াও সারা বছরই বাংলাদেশে খেজুরের চাহিদা রয়েছে। দেশে যেসব খেজুর খাওয়া হয় তা আমদানিনির্ভর। গাছগুলোয় ঠিকমতো ফলন আসে কিনা, এ জন্য আরও দুই-তিন বছর অপেক্ষার পর প্রান্তিক পর্যায়ে চাষাবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গাছ লাগানোর পর ব্যাপকভাবে ছড়িতে দেওয়ার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।
সান নিউজ/এসআই