সান নিউজ ডেস্ক: নাটোরে এক বিতর্কিত চিকিৎসক ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষিকার অবাধ যৌনাচারের ৪০ আর ২৮ মিনিটের অশ্লীল দুইটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সব পেশার সচেতন মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বইছে নিন্দার ঝড়।
আরও পড়ুন: আত্মঘাতী হামলায় ৪ সেনা নিহত
এছাড়া অবাধ যৌনাচারে সহযোগিতা না করায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক সেবিকাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ তুলে নাটোর জেলা প্রশাসক, ওই কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষে কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী ওই সেবিকা। একই সাথে কলেজ শিক্ষিকার অবাধ যৌনাচারের বিচার দাবি করেছেন ছাত্রছাত্রীরা।
ওই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাটোর শহরের পশ্চিম আলাইপুর হাফরাস্তা এলাকায় বসবাসকারী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম লিপন ও নাটোর সিটি কলেজের সমাজকল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক নাজমুন নাহার সাথীর ৪০ মিনিট ও ২৮ মিনিটের অবাধ যৌনাচারের দুটি ভিডিও নাটোর শহরের সচেতন প্রায় সকল মানুষের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তার মৃত্যু
নাটোরের জেলা প্রশাসকের কাছে এক সেবিকা লিখিত অভিযোগে বলেন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমিনুল ইসলাম লিপন ও নাজমুন নাহার সাথী নাটোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত অবাধ যৌনাচারে মিলিত হন। তিনি এই হাসপাতালে গত ছয় বছর থেকে সহকারী সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের অবৈধ কর্মকান্ডে সহযোগিতা না করায় প্রথমে তাকে প্রকাশ্যে মারপিট করে ও জেল খাটানোর হুমকি দেয়। পরে চলতি বছরের ৫ মার্চ পরিকল্পিত ভাবে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠায়।
এ বিষয়ে নাটোর সিটি কলেজের সমাজ কল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক নাজমুন নাহার সাথী বলেন, ডাঃ লিপন এবং আমার মধ্যে চিকিৎসক রোগীর সম্পর্ক। আমি চিকিৎসার জন্য নিয়মিত তার চেম্বারে যাতায়াত করতাম। একপর্যায়ে দুইজনের সম্মতিতে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে। তবে এ ভিডিও কিভাবে ফাঁস হলো, তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে
নাজমুন নাহার সাথী আরও বলেন, আমি অভিযোগকারী নারীকে চিনি না। তৃতীয় একটি পক্ষ আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ করছে। এই ধরনের অনৈতিক কাজের সাথে তার কোনো সম্পৃততা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে নাটোরে বসবাসকারী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম লিপনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল এবং এসএমএস দেওয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। একপর্যায়ে তার চেম্বারে গেলেও তিনি সাক্ষাৎ দেননি।
আরও পড়ুন: ফের ইসরায়েলি হামলায় হতাহত ৪২
তবে ডাঃ আমিনুল ইসলাম লিপনের ঘনিষ্টজন বলে পরিচিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন ক্লিনিক মালিক জানান, ওই শিক্ষিকা ফেসবুক এবং ফোনে ডাঃ লিপনের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি করেন। এক পর্যায়ে তিনি (শিক্ষিকা) নিজেই ঘনিষ্ট মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে এবং স্থানীয় কিছু তরুণকে দিয়ে ভিডিওটি পাঠিয়ে চিকিৎসককে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে মান-ইজ্জতের কথা ভেবে চিকিৎসক টাকা দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন। কিন্তু এর মধ্যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নাটোর শহরের কোন এক ক্লিনিেকে ডাক্তার আমিনুল ইসলাম লিপন এবং শিক্ষিকা নাজমুন নাহার সাথী সেক্স করেন। এসময় সাথি তার মোবাইল ফোন দিয়ে নিজেই গোপনে পুরো সেক্স ভিডিওটি ধারণ করেন।
আরও পড়ুন: শিয়ালদহ যাবে দার্জিলিং মেইল
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, শিক্ষিকা নাজমুন নাহার সাথীর সাথে ডাক্তার আমিনুল ইসলাম লিপনের মনোমালিন্য হয়। পরবর্তীতে সাথী নিজেই সেক্স ভিডিওটি রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছে পাঠান। পরে ঢাকায় জেলা যুবলীগ এবং সাবেক ছাত্রলীগের এক নেতার হস্তক্ষেপে অন্তত ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে রফাদফা হয়। এতে সাথী পান ২০ লাখ টাকা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই বৈঠকে থাকা সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।
এদিকে, নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান বিষয়টি খুবই বিব্রতকর আখ্যায়িত করে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাজমুন নাহার সাথীর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে মিটিং ডেকে শিক্ষিকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সরি প্রেমকান্ত, দেশে ফিরে যাও
অপরদিকে, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসতিয়াক আহমেদ ডলার বলেছেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। শিক্ষকতা আদর্শের পেশা। শিক্ষার্থী ও সমাজের মানুষ তাদের অনুসরণ করেন। একজন শিক্ষিকার এমন ভিডিও সমাজের অবক্ষয় ছাড়া কিছুই না। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভা ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/কেএমএল