মাদারীপুর প্রতিনিধি : 'বড় বিপদে আছি বাপু, দেড়কানি জমিনে পাট বুনছি, চকে পানি নাই, পাট জাগ দিতে পারতাছি না। সব পাট হুগনায় পইড়া গেছে।' এভাবেই কথা বলছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর গ্রামের পাট চাষী আবু বকর কাজী।
আরও পড়ুন : গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
অন্যান্য কৃষকের মত নিজে ২৪০ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু ভরা মৌসুমেও বর্ষার পানি চলে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানির অভাবে মাঠে থাকা পাটগুলো পচাতে পারছেন না। এমনকি শুকনো জমিতে পাট কাটার পরে পানির অভাবে সেগুলো মাথায় করে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
কেউ কেউ আবার শুকনো জমিতে পাট কেটে সেগুলো পাতা ছড়ানোর জন্য দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। সময় মতো পাটগুলো পচাতে না পারলে সোনালী আঁশ সোনালী রং ধারণ করবে না বলে চাষীদের আশঙ্কা।
মাঠ ঘাটে পানি না থাকায় পাট পঁচানো নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন সদর উপজেলার ছিলারচর, কালিকাপুর, পাঁচখোলা এবং খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের পাট চাষীরা। চাষীদের শঙ্কা সময় মত পাট কেটে পচাতে না পারলে পাটের রং সুন্দর হবে না, ন্যায্য মূল্যও পাবে না তারা। সারা বছরের পরিশ্রমই বিফলে যাবে তাদের।
আরও পড়ুন : ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর গ্রামের মাঠে-ঘাটে, খালে-বিলে তেমন পানি নেই। কোথাও পুরোপুরি শুকনো অবস্থায় চাষীদের পাট কাটতে হচ্ছে।
মাথায় করে সে পাট পচানোর জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে পারিবারিক পুকুরে, যেখানে গ্রামের মানুষেরা গোসল করে থাকে। এর ফলে দূষিত হচ্ছে পুকুরের পানি। পুকুরের আবদ্ধ ওই দূষিত পানি দিয়ে গোসল এবং রান্না করার ফলে নানা পানি বাহিত রোগের ও আশঙ্কা রয়েছে।
পাট চাষী মোঃ চান্দু সরদার বলেন, 'এই বছর অনেকগুলো পাট বুনছিলাম। কিন্তু পানির অভাবে এখন হেই পাট জাগ দিতে পারতাছি না। কষ্ট কইরা চকের থেকে মাথায় কইরা বাইত্যে পাট আনতেছি।
আরও পড়ুন : সারাদেশে বজ্রপাতে ৬ কৃষকসহ নিহত ৮
আরেক পাট চাষী মোঃ শাহাবুদ্দিন বেপারী বলেন, এই বছর পাট নিয়ে বড় বিপদে আছি। আমার অল্প কিছু পাট, হেইডাও জাগ দিতে পারতেছি না, ৮/১০দিন ধইরা পুকুরে ফালাই রাখছি।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জনাব মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, "সাধারণত মাদারীপুর জেলায় বর্ষা মৌসুমে পানির সংকট হয় না। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এ বছর আমাদের চাষী ভাইদের পাট নিয়ে কষ্ট করতে হচ্ছে।"
সান নিউজ/এইচএন