ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা বাচোর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল প্রদানকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে সুরাইয়া (৮ মাস) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরx কয়েকজন। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু শিশু নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
আরও পড়ুন: এক নৌকায় ২৫ লাখ টাকার ইলিশ!
বুধবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার ৫নং বাচোর ইউনিয়নে ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণা নিয়ে দ্বন্দ্বে ওই শিশুটি মারা যায়। নিহত সুরাইয়া বাচোর ইউনিয়নের মীরডাঙ্গী গ্রামের ফেরিওয়ালা বাদশার সন্তান।
বুধবার বিকেলে ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফলাফল ঘোষণা করার পরপরই ২ ইউপি সদস্যর কর্মী সমর্থকরা সঠিক ফলাফেলের দাবিতে সড়কে পুলিশের গাড়ি অবরুদ্ধ করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে। এতে পুলিশের গুলিতে সুরাইয়া নামে একজন শিশু নিহত হয়।
আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানির অভিযোগ করায় ছুরিকাহত ৩
এ ঘটনায় নিহত শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী লাশ নিয়ে রানীশংকৈল থানার সামনে আগুন জ্বালিয় সড়ক অবরোধ করে। সেই সাথে শিশুটির মরদেহ নিয়ে থানা ঘেড়াও করে।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ জনতার ইট পাটকেরের আঘাতে রুহিয়া থানার ওসি তদন্ত শহিদুর ইসলামসহ বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং পুলিশের গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এরপর পুলিশ ২য় দফা কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং শিশুটির লাশ তাদের হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। শিশুর পিতা মাতা বর্তমানে রানীশংকৈল উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা পুলিশের গুলিতে তাদের সন্তান নিহতের ঘটনায় বিচার চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: অস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার
এদিকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার দাবিতে সহিংসতার ঘটনায় শিশু নিহতের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুব রহমান তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাম কৃষ্ণ বর্মনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা তারেক আহমেদ বেগ এবং জেলা নির্বাচন অফিসার সফিকুল ইসলাম। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
শিশুটির মা মিনারা বেগম বলেন, পুলিশ তুচ্ছ ঘটনায় গুলি ছুঁড়ে আমার কোলের সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়েছে। আমার দায়ী পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সুরাইয়ার বাবা বাদশা মিয়া জানান, নির্বাচনের ফলাফল দিতে টালবাহানার কারণে কয়েকজন মেম্বার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা পুলিশের রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। পুলিশ সন্ত্রাসীদের ন্যায় অতর্কিতে গুলি ছুঁড়ে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উচ্ছৃঙ্খল জনতার হামলায় পুলিশের বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/কেএমএল