কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে ফাতেমা বেগম (১৯) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের সাথে অভিযুক্ত শাশুড়ি শাহিদা বেগমকে আটক হলেও ঘাতক স্বামী শামীম মিয়া পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন : মেক্সিকোয় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ১৪
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রেডক্রস এলাকার কানিপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের পুত্র শামীম মিয়ার (২৫) সাথে প্রতিবেশি সিদ্দিক আলীর কন্যা ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়।
গত শুক্রবার (১৫ জুলাই) দুপুরে স্বামী শামীম কে নিয়ে বাবার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা ফাতেমার। কিন্ত স্বামী ও শাশুড়ি রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। পরে ফাতেমাকে স্বামী শাশুড়ি মিলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক নির্যাতন করেন। এর একপর্যায়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে পথিমধ্যে শুক্রবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পিতা সিদ্দিক আলী বলেন, শুক্রবার তারা আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খেতে আসার কথা। জামাইয়ের দাবি, দাওয়াত খেতে আসলে যৌতুকের টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়। ইতোমধ্যে এক লাখ দিয়েছি। আবারো এক লাখ চাচ্ছে। আমি গরীব মানুষ এত টাকা পাই কোথায়। তারা যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই নির্যাতন করতো। অবশেষে আমার মেয়েটাকে মেরেই ফেলল। আমি এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
আরও পড়ুন : স্বর্ণের দামে বড় পতন
এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মেয়েটার বাবার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। পরে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায়। সামান্য বিষয় নিয়ে এমন নির্মম নির্যাতন খুবই অমানবিক।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা নিলুফা বেগম বাদি হয়ে যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্বামী শামীমকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সান নিউজ/এইচএন