এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : আষাঢ়ের শেষ দিনের দুপুর। রোদের তীব্রতায় ঝলসে যাচ্ছে চারপাশ। মাথার ওপর রুষ্ট সূর্যদেব ছড়িয়ে দিচ্ছেন আগুনের হলকা। দেশজুড়ে চলা প্রচণ্ড তাপদাহে দুঃসহ হয়ে উঠছে জনজীবন। ঈশ্বরগঞ্জের পিচঢালা পথ যেন জ্বলন্ত উনুন।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি
ঈশ্বরগঞ্জ সোনালী ব্যাংকের সামনে যাত্রী নামিয়ে হাঁপাচ্ছেন রিকশাচালক খোকন মিয়া। পিঠের সঙ্গে লেপ্টে থাকা সাদা শার্টে ঢেউ খেলছে ঘাম। এক পাশে রিকশা রেখে এগিয়ে গেলেন আখের রসের দোকানের দিকে। নিমিষের মধ্যে খালি করে ফেললেন এক গ্লাস আখের শরবত।
খোকনের মুখে এখন প্রশান্তি।শুধু রিকশাচালক খোকনই নন, শরবতের দোকানের চারপাশে ভিড় করে আছে স্কুলছাত্র,বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ তৃষ্ণার্ত মুখ। এ চিত্র সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার দুপুরের।
অসহনীয় গরমে একটু শান্তির ছোঁয়া পেতে গত এক সপ্তাহ ধরে ঈশ্বরগঞ্জে এভাবেই ভিড় জমাচ্ছে সড়কের বিভিন্ন মোড়ের ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানে। তীব্র তাপদাহের কারণে এখন চলছে জমজমাট শীতল শরবতের ব্যবসা। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ভবনের সামনে, কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন ও মুক্তিযোদ্ধা মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের ওপর সাজিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে আখ, ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ ও উপকরণ মেশানো শরবত। প্রকার ভেদে প্রতি গ্লাস শরবতের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা।
আরও পড়ুন : হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু
শরবতের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য 'আখের শরবত' তৈরি করছেন বিল্লাল মিয়া। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভবনের সামনে ভ্যানের বসিয়েছেন এ অস্থায়ী দোকান। তৌহিদ নামে এক পথচারী বিল্লালের তৈরি 'স্বাস্থ্যসম্মত' আখের শরবতের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললেন_ ঘরে লোডশেডিং, বাইরে ছাতিফাটা গরম। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। আখের শরবতে একটু স্বস্তি পেলাম।
এছাড়াও কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন আরেক শরবত ব্যবসায়ী শরবতে মেশাচ্ছেন ইসবগুলের ভুষি, তালমাখনা ও গুড়। সঙ্গে বরফজল তো আছেই। সামনে দেখা যায়,ছোট্ট চৌকির ওপর সাজানো আছে গ্লাস। তার দোকানের সামনে রীতিমতো ভিড় লেগে গেছে। গরমে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান দিনমজুররা। আবার এ গরমই তাদের কারও জন্য আয়ের উৎস! এ গরমে অনেকেই অন্য পেশা ছেড়ে নেমে পড়েছেন মৌসুমি শরবতের ব্যবসায়।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কা সংকটের পেছনে রাশিয়া দায়ী
আখের রস ব্যবসায়ী বিল্লাল মিয়া বলেন,দিন ভালো থাকলে অর্থাৎ যে সময় গরম বেশি থাকে সে সময় প্রতিদিন শরবত বিক্রি করে তারা আয় করেন এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়াও অন্যান্য এলাকার ভ্রাম্যমাণ শরবত ব্যবসায়ীর আয়ও প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ' থেকে হাজার টাকা।
সান নিউজ/এইচএন