সান নিউজ ডেস্ক: গাজীপুরে বাসের ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কন্ডাক্টর ও হেলপার মিলে যাত্রীকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চাকায় পিষে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চালক ও হেলপারকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকার লঙ্ঘন
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেটের অদূরে এশিয়ান ফার্নিচারের দোকানের সামনে ঢাকা-শিববাড়ি সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বাস যাত্রী সায়েম (২০) ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার আওলাপাড়া এলাকার মো. আবু সাইদের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক বাসসহ চালক ও হেলপারকে আটক করেছে।
আটকরা হলো বাস চালক নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার কুটিপাড়া এলাকার আব্দুর মাহমুদের ছেলে মো. সফিকুল ইসলাম (২৬) ও হেলপার হারিছ মিয়া (২৭) নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থানার মাগান এলাকার ফরিদ মিয়ার ছেলে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইদুর রহমান খান এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানান, নিহত সায়েম গাজীপুর মহানগরের উত্তর ছায়াবীথি এলাকায় আলিমের বাসায় ভাড়া থেকে স্থানীয় শিববাড়ির একটি গ্রিল ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।
সায়েম কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে তাকওয়া পরিবহনের বাসে ওঠেন। পথিমধ্যে ভাড়া নিয়ে হেলপারের সঙ্গে সায়েমের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে হেলপার তাকে শিববাড়ি বাসস্ট্যান্ডে না নামতে দিয়ে আরও সামনের দিকে নিয়ে যায়। বাসটি যখন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেটের অদূরে এশিয়ান ফার্নিচারের দোকানের সামনে পৌঁছে তখন সায়েমকে শিববাড়ি-জয়দেবপুর চৌরাস্তা সড়কে ওপর ফেলে দেয়।
পরে ওই বাসের চাকাতেই পিষ্ট হন সায়েম। ফলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বাসটি জব্দ এবং ঘাতক বাসের চালক ও হেল্পারকে আটক করেছে পুলিশ।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিক্টিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিহতের বাবা মো. আবু সাইদ জানান, আমার ছেলেকে বাসের চালক ও হেল্পার বাস থেকে ফেলে হত্যা করেছে। আমি জড়িত চালক-হেল্পারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ছেলে হারানোর শোকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর সদর থানা ক্যাম্পাসে বসে তাকে আহাজারি করতে দেখা গেছে। ঘটনার পর থেকে ওই পথে তাকওয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় যাত্রী আবিদ হোসেন জানান, প্রতিনিয়তই তাকওয়া পরিবহণের বাসের চালক-হেলপারদের বিরুদ্ধে যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা যখন-তখন ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, যাত্রীরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে। অধিকাংশ বাসের চালকের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। চালক-হেল্পাররাও অপ্রাপ্ত বয়স্ক। জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায়ও এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। তারপরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করছেন বরিস!
বিআরটিএ গাজীপুরের উপপরিচালক মো. আবু নাঈম জানান, আমরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়েছি। কয়েকজনকে জেল জরিমানাও করা হয়েছে। বিষয়গুলোর পুনারাবৃত্তি ঘটলে এ ব্যাপারে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এসআই