মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : আমি ছেলে হারিয়ে অসহায় হয়ে পরেছি। আমি ছেলে হত্যার সঠিক বিচার যেন পাই। প্রশাসনের কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ রইলো। আমার আশা যেন পূর্ণ করে প্রশাসন, আমি একজন স্বামী হারা, এখন ছেলেও হারালাম। আমি ‘মা’ হয়ে আর কষ্ট সইতে পাচ্ছি না। আমার ছেলে ছিল, আমার একমাত্র সম্বল ও উপাজর্নকারী। আমার মতো যেন, আর কোন সন্তান কেউ না হারায়। কথা গুলো কান্না করে বলেছিলেন নিহত আসিফের মা নাছিমা আক্তার।
আরও পড়ুন : বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে “আসিফ হত্যার বিচার চাই, শাহ্ সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর ঘাতক ট্রাক ড্রাইবারের শাস্তি চাই” এই স্লোগানে শিক্ষক শিক্ষিকা, পৌর কাউন্সিলর, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ , আত্মীয়-স্বজন ও ছাত্র-ছাত্রী মানববন্ধন করেন।
আসিফ মুন্সীগঞ্জ সরকারি হরগঙ্গা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের (অনার্স) ৩য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। নিহত আসিফ ইকবাল মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের রনছ পারুল পাড়া এলাকার মৃত তোফাজ্জল হোসেন পিন্টুর ছেলে।
মানববন্ধনের বক্তব্য রাখেন- মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাত্তার মুন্সী, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর হোসনে আরা বেগম, নিহতের মা নাছিমা আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, কাউসার মোল্লা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা লতিফা সিকদার, প্রভাষক আসিব আহমেদ, মোজাম্মেল হোসেন, আব্দুল আল মামুন, স্বপন মোল্লা, চয়ন, সাব্বির প্রমুখ।
আরও পড়ুন : ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
মানববন্ধনকারীরা বলেন- শাহ্ সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর ঘাতক ট্রাক ড্রাইভারের যেন শাস্তি হয়। সেই দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে। আমার ভাইয়ের হত্যার যদি বিচার না পাই, তাহলে এই আন্দোলন আরও কঠোর হবে বলে হুশিয়ারি দেন তারা। আসিফ একজন মেধাবী ছাত্র ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে ছিলেন। আমরা আর আফিসকে পাবো না। আমরা ঘাতক ড্রাইভারের শাস্তি চাই। আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। আর যেন কেউ সড়কে প্রাণ না হারায়। ছাত্র সমাজ ও সকলেই যেন শান্তিপূর্ণ ভাবে রাস্তায় চলাচল করতে পারে সেই দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার উত্তর কাশিপুর এলাকায় মুসকান মটরের সামনে এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আসিফ ইকবাল তার বন্ধু সাব্বিরকে নিয়ে ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনা নিহত হয়।
আরও পড়ুন : বাড়ল চামড়ার দাম
জানা যায়, শাহ্ সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর ঘাতক ট্রাক ড্রাইভার বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাছিলেন। মটরসাইকেল অনেক বার হরেণ দেওয়ার পরেও মটরসাইকেলের সাথে ধাক্কা লাগিয়ে দেই। এতে আসিফ ইকবাল ও তার বন্ধু সাব্বির গাড়ি থেকে পড়ে যান। আসিফ ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং গুরুতর আহত হয় সাব্বির।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ট্রাক ও চালক আটক করা হয়েছে ঘটনাস্থলেই। লাশ ময়নাতদন্তের শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাকটি আমাদের কাছে এখনও আটক আছে। আমারও চাই যেন পরিবার সুষ্ঠু বিচার পায়।
সান নিউজ/এইচএন