কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের উলিপুরে নির্দিষ্ট সময়ে তালিকা প্রণয়ন না হওয়ায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা ল্যাপস (ফেরত) যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটে। এতে করে এ উপজেলার ৫ হাজার ৭১ জন হত দরিদ্র উপকারভোগী পরিবার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এসব মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: রেল যোগাযোগ বন্ধ
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অথার্য়নে ২০২১-২২ অর্থবছরে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে এ উপজেলার অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় প্রথম পযার্য় ৫ হাজার ৭১ জনের জন্য ১৬ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৭ নভেম্বর চিঠি দেয়। এতে প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলার ইজিপিপি ও ভিজিএফ কর্মসূচির ডাটাবেজ হতে যাচাই বাচাই করে ৫ হাজার ৭১ জন উপকারভোগীর নামের তালিকা প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কয়েকদফা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়াম্যানদের চিঠি প্রদান করলেও বেশিরভাগ চেয়ারম্যান তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হন। কিন্ত গত ১০ জুন প্রকল্পের নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ায় এ উপজেলার ৫ হাজার ৭১ জন হতদরিদ্র এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ভোটের সময় স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও সহকারীদের মাধ্যমে উপকারভোগীদের জনপ্রতি ২ থেকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তালিকা তৈরি করা হয়। পরে চেয়ারম্যানগণ নির্বাচিত হওয়ার পর ওই তালিকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়। এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ভাগ বাটোয়ারায় বনিবনা হতে অনেক বিলম্ব হয়ে যায়। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় দারিদ্রপীড়িত এ উপজেলার মানুষজন সরকারের এই সুফল থেকে বঞ্চিত হন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে স্বপরিবারে প্রধানমন্ত্রী
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানগণ সময়মত তালিকা দিতে না পারায় এবার কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, প্রথমত চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত হয়ে এসে বিষয়টি বুঝতে পারেনি। আমরা তাদেরকে কয়েকবার তাগিদ দিয়েছি, এরপর বন্যা এসে গেছে। তবে প্রকল্পের টাকা ফেরত গেলেও আবার আসবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সান নিউজ/কেএমএল