এহসানুল হক,ঈশ্বরগঞ্জ( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আর মাত্র কয়েকদিন পরই পালিত হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ। দুয়ারে ঈদ কড়া নাড়লেও পোশাকের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা নেই। এমনকি দিনের বেশিরভাগ সময় ক্রেতাদের দেখাই পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে তাদের অলস সময় পার করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : নাইজেরিয়ায় হামলায় নিহত ৩০ সেনা
রোববার (৩ জুলাই) ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরগঞ্জের অধিকাংশ মার্কেটে ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা নেই। ক্রেতা না থাকায় পোশাক ব্যবসায়ী ও কর্মীদের কেউ কেউ গল্প করে সময় পার করছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইলে গেম খেলে কিংবা গান শুনে সময় পার করছেন। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার,আঠারবাড়ী, উচাখিলা ও মাইজবাগসহ ছোট - বড় সব ক'টি বাজারের শপিং মল গুলোতে ক্রেতাদের সংকট দেখা গেছে। এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা যেন তীর্থের কাকের মতো ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত রোজার ঈদে পোশাকের ভালো বেচা-কেনা হয়েছে। কোরবানীর ঈদে ব্যবসা ভালো হবে না, এমন ধারণা আগেই ছিলো। সে কারণে এবার ব্যবসায়ীরা ঈদ কেন্দ্রিক বিনিয়োগ কম করেছেন। তবে যেটুকু প্রত্যাশা ছিলো, সেরকম ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত
তারা বলছেন, সবসময় কোরবানির ঈদে সবার নজর থাকে পশুর হাটের দিকে। এ সময় নতুন পোশাক কম বিক্রি হয়। তার ওপর আগে কম বেশি টুকটাক বিক্রি হতো,কিন্তু এবার বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এর ফলে খরচের লাগাম টানতে বেশিরভাগ মানুষই হিমশিম খাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে পোশাকের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। পৌরসভার শতাব্দী প্লাজা,শ্রীকৃষ্ণ বস্ত্রালয়, আল মদিনা বস্ত্রালয়,শৌখিন বস্ত্রালয়সহ বেশ ক'টি পোশাকের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, তিনজন বসে গল্প করছেন। এদের মধ্যে মো. আমান উল্লাহ নামের একজন বলেন, ঈদকেন্দ্রিক আমাদের কোনো বিক্রি নেই। দেখেন, এখানের সব দোকান খালি। কারও বিক্রি নেই। যে বিক্রি হচ্ছে, তা দিয়ে দোকান ভাড়াই উঠবে না।
তিনি আরও বলেন, কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক নতুন পোশাক বিক্রি কম হয়। তবে এতো কম এর আগে হয়নি। এবার বিক্রি একেবারেই নেই। আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। আমাদের কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারি না।
আরও পড়ুন : সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৫৩৩৬৭ হজযাত্রী
এদিকে আসানুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সবাই বলে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভ করে। কীভাবে লাভ হয়, তার ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারে না। আমাদের দোকান ভাড়া আছে। কর্মীর বেতন আছে।সারাজীবন ধরে নিয়মিত কোরবানি দেই। এবার কোরবানি দিতে পারব কি না সন্দেহ আছে, বিক্রিই নেই। দোকান ভাড়া ও কর্মীর বেতন দেবো কীভাবে, সবসময় সেই চিন্তায় থাকি।
অন্যদিকে পৌর এলাকার কালিবাড়ি রোডে ইতু ফ্যাশনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ী মোবাইলে গেম খেলছেন। মো.আসাদুল্লাহ নামের ওই ব্যবসায়ী বলেন, এবার ঈদকেন্দ্রিক কোনো বিক্রি নেই। এখন যেমন দেখছেন, দিনের বেশিরভাগ সময় এমন ক্রেতাশূন্যই থাকে। কাপাল ভালো হলে, মাঝেমধ্যে এক-দুজন ক্রেতা পাচ্ছি। ঈদের দুই - একদিন আগে কিছু বেচাকেনা হতে পারে।
আরও পড়ুন : ট্রায়ালের অনুমতি পেল সূঁচবিহীন টিকা
তিনি বলেন, এবার যতটুকু বিক্রি হবে ধারণা করেছিলাম, তাও হচ্ছে না। রোজার ঈদের সঙ্গে তুলনা করলে এখন বিক্রি পাঁচ ভাগের এক ভাগও নেই। অল্প কিছু লাভ পেলেই মাল ছেড়ে দিচ্ছি। এমন কি চালান তোলার জন্য কিছু কিছু শার্ট, প্যান্ট কেনা দামেও বিক্রি করে দিচ্ছি।
একই চিত্র দেখা গেছে আতর ও টুপির দোকান গুলোতেও।বিনিময় আতর হাউজ ও জনপ্রিয় আতর হাউজের মালিক সাইফুল ইসলাম এবং রবিউল আলম বলেন, বেচাকেনার অবস্থা খুব খারাপ। তবে ঈদের দুই একদিন আগে কিছু বেচাকেনা হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
সান নিউজ/এইচএন