এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): কোরবানির ঈদ এলেই টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন কামার পাড়াগুলো। বেড়ে যায় কারিগরদের ব্যস্ততা। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জও তার ব্যতীক্রম নয়। হাতুড়ি পেটা শব্দে মুখর ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভাসহ ও বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকান।
আরও পড়ুন: কমেছে স্বর্ণের দাম
সারাদিন তপ্ত ইস্পাত গলিয়ে চলছে পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরির কাজ। দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। কাক ডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন।
কামারের দোকান গুলোতে এখন গেলেই শোনা যায় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। কেউ ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খণ্ড। কেউ পুরনো দা-ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। কেউবা হাপর টানছেন। কেউ আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে শ্রীলেখা
ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায় দা, ছুরি, চাকু ও বঁটির বেচাকেনা বেড়েছে। দামও সন্তোষজনক। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে ব্যস্ততা আরও বাড়বে বলে জানান কামাররা।
এদিকে, কামার কারিগররা অভিযোগ করেন, বর্তমান সময়ের দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগামী। এ সময়ে তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারাদিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা শরীরে তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: হঠাৎ চড়া মসলার বাজার
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কামাররা বলেন, সারা বছর আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে কোরবানির সময় বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি হয়। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের চেয়ে কম।
উপজেলার পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের কামার একাদুল মিয়া জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। এছাড়া আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব পণ্য তৈরির বেশকিছু প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। তাদের প্রত্যাশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: অনলাইন টিকিটে ফাঁকফোকর পেলে ব্যবস্থা
চরহোসেনপুর গ্রামের কামার মুখলেছ বলেন, সারা বছর বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে। কোনোরকম দিন যায়। এই সময়ের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। কোরবানির ঈদের আগে বেচাকেনা ভালো হয়।
এদিকে, অমর নামের আরেক কামার বলেন, সারাদিন উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক খরচ বাদে ৪ থেকে ৫ শত টাকা লাভ হয়। তবে কোরবানি ঈদে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে ব্যবসা বেশি হয়।
আরও পড়ুন: মসজিদের দানবাক্সে মিলল ১৬ বস্তা টাকা
কয়েকজন ক্রেতা জানান, কুরবানি ঈদের আর মাত্র কিছুদিন বাকি তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বঁটির দাম একটু বেশি বলে জানান তারা।
সান নিউজ/কেএমএল