খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল : বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও স্বাভাবিক হয়নি যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে মানুষের চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর যখন চারদিকে বন্যার পানিতে অজস্র রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে, তখন নৌকা ও কলাগাছের ভেলা হয়ে উঠেছে নিচু ও চরাঞ্চলের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা।
আরও পড়ুন: হঠাৎ চড়া মসলার বাজার
এ কারণেই টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কারিগরদের পাশাপাশি পুরনো নৌকাগুলো মেরামতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের নৌকার মাঝিরাও।
শনিবার (২ জুলাই) সরেজমিনে উপজেলার গাবসারা, গোবিন্দাসী অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকার কারিগররা ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারিগররা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় এসব নৌকা তৈরি করেছেন। এসময় দেখা গেছে, কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটছেন, কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেরেক মারছেন আবার কেউ তৈরি নৌকায় গাবের পানি, রং ও আলকাতরা দিতে ব্যস্ত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনেও কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়
সিরাজকান্দীর নৌকার কারিগর মোহর আলী বলেন, ‘আমি ঘর তৈরির পাশাপাশি নৌকা বানানোর কাজ করি। বর্ষা মৌসুমে সাধারণত আমাদের কোন কাজ থাকে না, এখন নৌকার বাড়তি চাহিদা থাকায় নৌকার কাজ করছি। সেই সাথে বাড়তি আয়ও হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজনের একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে দুইদিন সময় লাগে। আর প্রতিটি নৌকার মজুরি দেওয়া হয় ২ হাজার টাকা। আর একটি বড় নৌকা তৈরিতে সময় লাগে ১৫ দিন থেকে ১ মাস। একটি ৭০ হাত নৌকা বানাতে খরচ পড়ে প্রায় ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আমাদের মজুরি উঠে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নৌকার কাজ করে আমাদের সংসার ভালোই চলছে।’
আরও পড়ুন: মসজিদের দানবাক্সে মিলল ১৬ বস্তা টাকা
নিকরাইলের নৌকার কারিগর আমিনুল বলেন, গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম শাপলা, তিনি চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে নৌকাগুলো বিতরণের জন্য তৈরি করেছেন বলে শুনেছি। চরাঞ্চলের মানুষের নৌকার চাহিদা থাকায় আমাদের নৌকা তৈরি কাজ বেড়েছে।
গাবসারার রামপুরের নৌকার কারিগর সেলিম বলেন, ‘নৌকার কাজ না থাকলে হয়তো এই সময় আমাদের বসে থাকতে হতো। নৌকা বিক্রিও মোটামুটি ভালো। সেই সাথে আমাদের ইনকাম-সোর্সও ভালো হচ্ছে ‘
আরও পড়ুন: ভক্তের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে পীর
গোবিন্দাসী ব্যবসায়ী সাহেবুদ্দিন বলেন, ‘নৌকার এখনও চাহিদা আছে। প্রতিটি ছোট নৌকা ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। আজ একটি বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকায়। আমার কাছে এখনো ছোট ছোট বেশ কয়েকটি নৌকা রয়েছে।’
সান নিউজ/এফএ