মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে এক গৃহবধূ তার কাবিননামা চাইতে কাজি অফিসে গেলে, ওই অফিসের কাজির সহকারী আ. রশিদ গৃহিনীকে কাজি অফিস হতে বের করে দিয়ে অফিসের গেইটে তালা ঝুঁলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: প্রায় ২ কোটি টাকার টোল আদায়
ভুক্তভোগী গৃহবধু সুমাইয়া আক্তার বলেন, গত ৩ দিন ধরে আমি মুন্সীগঞ্জের পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অবস্থিত কাজি অফিসে একাধিকবার যাই। আমার বিয়ের কাবিননামার জন্য। কাবিননামা চাইতে গেলেও কাজি আমার স্বামীর পরিচিত হওয়ায় তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমকে আমার বিয়ের কাবিননামা দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকাল ৯ টার দিকে আমি আমার কাবিননামা তুলতে পুনরায় কাজি অফিসে যাই। এ সময় ওই অফিসের কাজি আ. রশিদ আমাকে কাজি অফিস হতে বের করে দিয়ে অফিসের গেইটে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী
ভুক্তভোগী বলেন, সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামের মৃত জব্বার খানের ছেলে হানিফ খান খোকনের সাথে আমার গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়। বর্তমানে আমি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার স্বামী অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবসা করে। কিছুদিন আগে পুলিশ আমার স্বামীর কারখানায় অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল ও মেশিন নিয়ে যায় এবং আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়। পরে আমার স্বামী জেল খেটে বের হয়ে আমার কাছে তার ব্যবসা পুনরায় শুরু করার জন্য ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক চায়। আমি যৌতুক দিতে না পারায় গত ২৭ মে স্বামী ও তার ভাই স্বপন আমাকে মারধর করে বাড়ি হতে তারিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমি এখন আমার গর্ভে ৭ মাসের বাচ্চা নিয়ে মায়ের বাড়িতে অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছি। আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে আমার বিয়ের কাবিননামা তুলতে পঞ্চসার কাজি অফিসে গত মঙ্গলবার থেকে যাচ্ছি। কাজি আমাকে প্রথমে কাবিননামা দিবে বললেও এখন কাবিননামা দিচ্ছে না। ৩ দিন যাবৎ ঘুরাচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী ভালো কাজ করেছেন
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯ টার দিকে আমি কাজি অফিসে আমার কাবিননামা চাইতে গেলে অফিসের কাজি আমাকে কাজি অফিস থেকে বের করে দিয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় আর বলে তোমাকে কাবিননামা দেওয়া যাবে না। যা পারো করোগা।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নাজিমউদ্দিন বেপারীর মেয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মানিকপুর গ্রামের (সুমনের বাড়ির ভাড়াটিয়া)।
আরও পড়ুন: কাভার্ড ভ্যানচাপায় নিহত বেড়ে ৫
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাজীর সহকারী আ. রশিদ বলেন, আমাদের অফিসের মূল কাজি বিল্লাল হোসেন সাহেব সৌদি আরবে হজে গেছেন। তার অবর্তমানে অপর একজন ভারপ্রাপ্ত কাজি এবং আমি অফিস পরিচালনা করছি। আপনি কাবিন নিতে আসা ওই মহিলাকে আগামীকাল (শুক্রবার) পাঠিয়ে দিয়েন, আমি কাবিননামা দিয়ে দিব।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রধান সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীকে আমাদের রেজিস্টার অফিসের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/কেএমএল