কামরুজ্জামান স্বাধীন, (উলিপুর) কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের উলিপুরে বানভাসিদের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে বিপাকে পড়েছেন ব্রহ্মপুত্রের উপর ভেসে থাকা মানুষ ও গবাদিপশুসহ অন্যান্য প্রাণী। বেড়েই চলছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি। উলিপুর উপজেলায় প্রায় ১ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছেন। বুধবার (২২ জুন) দুপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলায় সেতু পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানি ঘরে ঢুকে গেছে, তাই ছাড়তে হবে ভিটা। আশ্রয় নিতে হবে কোনো উঁচু জায়গায়। নিরাপদ স্থানের উদ্দেশে যাত্রায় প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র ছাড়া কিছুই সঙ্গে নিতে পারেননি এই বানভাসী মানুষগুলো। চুলা ভেঙে যাওয়ায় কয়েকদিন ধরে আগুন জ্বলেনি রান্নার। শুকনো খাবার খেয়ে কোনোরকমে দিন পার করছেন এসব মানুষ। শুধু তাই নয়, সখের বশে পালন করা গবাদিপশু নিয়েও পড়েছেন চরম বিপাকে। এরকম চিত্র দেখা গেছে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ, সাহেবের আলগা, বুড়াবুড়ি ও হাতিয়া ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায়।
বুধবার (২২ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবন বাঁচাতে বানভাসিরা বাড়ি ঘরের আসবাবপত্র ফেলে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্গত এলাকার মানুষ উচু স্থান ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে কোন মতে বসবাস করছেন। বানভাসিদের অভিযোগ, কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও সরকারিভাবে এখনও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি। তাই অনেকেই খেয়ে-না খেয়ে দিন পার করছেন। খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি দ্রুত সরবরাহের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলগুলো একের পর এক প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নি¤œাঞ্চলের মানুষগুলো। ফলে এলাকার অনেকেই রাস্তার ধারে তৈরি করছেন অস্থায়ী ছাপরা ঘর।
পানিবন্দি ফুলমালা বলেন, ‘বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, কোন মতে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি, রাত হলেই সাপ-পোকার ভয়ে আতঙ্ক বেড়ে যায়। বৃষ্টি হলেই আরো দূর্ভোগে পড়ি, এভাবেই খুব কষ্টে দিন পার করছি আমরা।থ আছিয়া বেগম বলেন, ‘বানের পানিতে সবকিছু ডুবে গেছে। স্বামী-সন্তান নিয়ে বাঁধের উপর উঠেছি। রান্নার করার মতো কোনো কিছুই আমাদের কাছে নেই। দিনে একবার রান্না হলে বাকি দুথবেলা হয় না। স্বামীর এখন কোনো কাজও নেই। আমাদের খোঁজ-খবর কেউ নেয়নি।
বেগমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, পানিবন্দি মানুষ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে, রাস্তা-ঘাট ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার ইউনিয়নে পানিবন্দি ২৫ হাজার মানুষ, কিন্তু সরকারিভাবে শুধু ৭'শ লোকের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। পানিবন্দি মানুষের জন্য আরো ত্রাণ প্রয়োজন।
সাহেবের আলগা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন জানান, তিন ওয়ার্ডের ৭'শ মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আর ত্রাণ না থাকায় অন্যান্য ওয়ার্ডে বিতরণ করতে পারি নাই। পানিবন্দি মানুষের জন্য আরো অনেক ত্রাণের প্রয়োজন।পানিবন্দি মানুষের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, পানিবন্দি ইউনিয়নগুলোর মধ্য ৫০ মেট্রিকটন চাল এবং পৌরসভার জন্য ৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ২ লক্ষ টাকার শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ৩ লাখ ৫০ হাজার, এবং গো-খাদ্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্রয় করা হয়েছে। এগুলো বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩৩৮ মেট্রিকটন চাল, সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৮লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য ক্রয় করা হচ্ছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। পানিবন্দি মানুষের জন্য আরো ত্রাণ প্রয়োজন।
সাহেবের আলগা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন জানান, তিন ওয়ার্ডের ৭'শ মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আর ত্রাণ না থাকায় অন্যান্য ওয়ার্ডে বিতরণ করতে পারি নাই। পানিবন্দি মানুষের জন্য আরো অনেক ত্রাণের প্রয়োজন।পানিবন্দি মানুষের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
বুধবার বিকেলে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, পানিবন্দি ইউনিয়নগুলোর মধ্য ৫০ মেট্রিকটন চাল এবং পৌরসভার জন্য ৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ২ লক্ষ টাকার শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ৩ লাখ ৫০ হাজার, এবং গো-খাদ্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্রয় করা হয়েছে। এগুলো বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩৩৮ মেট্রিকটন চাল, সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৮লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য ক্রয় করা হচ্ছে।
সান নিউজ/এনকে