আজিজ রাসেল, কক্সবাজার: পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ন ও অবৈধভাবে বসবাসরতদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (২১ জুন) রাত ১০ টা থেকে এ অভিযান শুরু করেন জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে টিমগুলো কাজ শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন : বড় খরচ উঠুক, তারপর দ্বিতীয় পদ্মা সেতু
প্রথমদিনে শহরের বৈদ্যঘোনা থেকে প্রায় ৩০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে এনেছেন জেলা প্রশাসন।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ বলেন, "জীবন ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সকল ধরণের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। ইতোমধ্যে পাহাড়ের বসতি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জীবন ঝুঁকি নিয়ে যারা পাহাড়ে বসবাস করছেন তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অভিযান শুরু হবে।
এ সময় পাহাড়ের পাদদেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের জীবন রক্ষায় সাইক্লোন শেল্টার অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসা বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক। অন্যথায় প্রশাসনের টিম গিয়ে ঘরগুলো সিলগালা করে দেবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।"
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজ বলেন, "খানিকটা বিরতি দিয়ে গতরাত থেকে আবারও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাত আরও কয়েক দিন চলতে পারে। এই মুহুর্তে কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে থাকা মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। যাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তারা নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, এসব টিমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মচারি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন।"
এ সময় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারে পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। এসব মানুষের দখলে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর পাহাড়। সাধারণ মানুষকে ঢাল বানিয়ে মূলত এসব পাহাড় দখলে রেখেছে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীরা। কক্সবাজার অঞ্চলে পাহাড় কাটার যেনো ধুম লেগেছে। এ অঞ্চলে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সন্ত্রাসী তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য পাহাড় দখল করে বসতি গড়ছে। শুধু তাই নয়, তারা বিক্রি করছে সরকারি পাহাড়ের দখলস্বত্বও। বর্ষা এলেই পাহাড়কাটা শুরু হয় সমতল ভূমি করার চেষ্টায়।
সান নিউজ/এসআই