সান নিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে পুলিশ ও র্যাবের সাথে স্থানীয় বিহারি ক্যাম্পের লোকজনের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কমপক্ষে ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন : পদ্মা সেতু থেকে আসবে ১৬০৪ কোটি
সোমবার (১৩ জুন) সকালে ঘটনাটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে আদমজী এলাকার চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিহারী ক্যাম্পের কয়েক শ’ নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে।
আদমজী জামে মসজিদের ভেতর পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় রোববার (১২ জুন) দিবাগত রাত ১টা থেকে সোমবার ভোররাত ৪টা পর্যন্ত বিহারী ক্যাম্পের ভেতর অভিযান চালায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
আরও পড়ুন : সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ
অভিযানে ৩৬ জনকে গ্রেফতার এবং অনেক নারী-পুরুষকে লাঞ্ছিত এবং ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের অভিযোগ আনে বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দারা।
এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা থানা কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আদমজী ইপিজেডে প্রবেশ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে অ্যাকশনে ঘিয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আরও পড়ুন : ড. ইউনূসের মামলার কার্যক্রম স্থগিত
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে থানা কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয় বিহারীরা এবং আদমজী ইপিজেডের তিনটি প্রবেশ পথে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। শ্রমিকদের ভেতরে ঢুকতে দিলেও কোনো গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল তারা।
সকাল ৮টার দিকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা সড়কের উপর কাঠের টেবিল, চৌকি ফেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযানে যদি কোনো নিরপরাধ মানুষ আটক হয়ে থাকে আলোচনার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বলে সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায় তারা। এক পর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে অ্যাকশনে যায় পুলিশ ও র্যাব।
আরও পড়ুন : মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৬৫
এসময় বিহারীরা পুলিশ ও র্যাবের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিহারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করে।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শওকত জামিল জানান, রাতে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে কয়েকটি পয়েন্টে।
আরও পড়ুন : ঈশ্বরদীতে রুশ নাগরিকের মৃত্যু
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১০ জুন) জুম্মার নামাজের সময় খুদবার আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই আজিজুল হক ইমাম সাহেবের কাছ থেকে মাইক নিয়ে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলে, ভারতে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করা হয়েছে। প্রতিবাদ হচ্ছে। ভারতের বিষয় ভারতে থাক। ভারতে বিষয়ে এখানে আমরা না আনি। প্রতিবাদ করবো কিন্তু যেন বিশৃংখলা না হয়। তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তার ওপর দফায় দফায় হামলা করে তাকে রক্তাক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২০/১২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
সান নিউজ/এইচএন