হলি সিয়াম শ্রাবণ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক প্রতিবন্ধী তরুণী (১৮)। তাকে অপহরণের পর গর্ভপাতের অভিযোগে খাইরুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩
শনিবার (১১ জুন) রাতে গৌরীপুর থানার পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন খাইরুল ইসলামকে ময়মনসিংহের সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক রাজিব আহমেদ তালুকদার তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক প্রসুন কান্তি দাস বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত খাইরুল ইসলাম গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকার দরকার
জানা গেছে, এ ঘটনায় শনিবার (১১ জুন) রাতে ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে মো. খাইরুল ইসলাম, তার মা মদিনা আক্তার, চাচাসহ ৪ জনকে নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করে গৌরীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই পুলিশ ও র্যাব-১৪ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি খাইরুল ইসলামসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে।
তরুণীর মা সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়ে কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। এই সুযোগে খাইরুল ৭ থেকে আট মাস আগে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। মেয়ে এ ঘটনা এতদিন চেপে রাখে। সম্প্রতি তার শারীরিক পরিবর্তন হলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে বাহরাইন
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, মামলা দায়েরর পর রাতেই অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধারসহ প্রধান আসামি খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন সকালে খাইরুল ইসলামকে আদালতে ও ভুক্তভোগী তরুণীকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ভুক্তভোগী তরুণী প্রতিবন্ধী। আনুমানিক ৭ থেকে ৮ মাস আগে খাইরুল ইসলাম তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। সম্প্রতি ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত ২৭ মে মধ্যরাতে খাইরুল ও সোহেল ভুক্তভোগীর বাড়িতে ডুকে তরুণীসহ তার মাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর ওই তরুণীকে আটকে রেখে তার মাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডে আরও দুটি ব্লক
এদিকে, ভিকটিমের মা খাইরুলের মা বাবাকে ঘটনাটি জানানোর পরও কোন সুরাহা না হওয়ায় শনিবার (১১ জুন) ওই তরুনীর মা র্যাব-১৪ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করেন। পরে র্যাবের পরামর্শে তরুণীর মা গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে খাইরুল ইসলাম ও তার চাচা আসাদুজ্জামান গ্রেফতার করে। পরে আসাদুজ্জামানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের আরও জানান, গ্রেফতারকৃত খাইরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং ১ জুন কোর্ট ম্যারিজ করে ওই তরুণীকে বিয়ে করেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্ব জুড়ে আরও কমেছে মৃত্যু
ভুক্তভোগী তরুণী নিজেকে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দাবি করে সাংবাদিকদের জানান, অপহরণের পর খায়রুল বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করায়। গর্ভপাতের পর তাকে বিয়ে করে খায়রুল।
সান নিউজ/কেএমএল