কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার যুগিবরাট গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন : ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বােধন
সোমবার (২৩ মে) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যায়। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. শরীফুল মোল্যা (২২)। সে ওই গ্রামের সাইদ মোল্যার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে। শরীফুল বোয়ালমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে সরেজমিনে গেলে নিহত শরিফুলের চাচা ইসলাম মোল্যা (৫৮) জানান, গত ৩০ এপ্রিল বিকালে বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের নদীয়ারচাঁদ বাওড়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের যুগিবরাট গ্রামের হুমায়ুন মোল্যা (৬০) ও বিল্লাল মোল্যা (৪০) এর সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই রেশ ধরে গত ২১ মে শনিবার সকাল ৯ টার দিকে ভাতিজা শরিফুলকে সাথে নিয়ে যুগিবরাট মাদ্রাসার সামনে গেলে জানতে পারি ইয়াকুব মোল্যার বাড়ির পাশে কিছু লোকজন জড়ো হয়েছে।
আরও পড়ুন : রাশিয়ার সঙ্গে বন্দিবিনিময়ের জন্য প্রস্তুত
এ সময় এক প্রতিবেশী বলেন, এখানে পুলিশ আসছে, এ কথা শুনে আমি আমার ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত বাওড়ে আমাদের জমিতে যাওয়ার জন্য রওনা দেই। পথিমধ্যে ইয়াকুবের বাড়ির কাছে পৌঁছালে দেখতে পাই পাঁচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই নং ওয়ার্ড সদস্য গিয়াস ব্যাপারী (৩২) এর সমর্থকরা ঢাল শরকি, রামদাসহ ৫০-৬০জন লোক জড়ো হয়ে আছে। সাথে সাথে ওই লোকগুলো আমাকে ও আমার ভাতিজা শরিফুলকে ঘেরাও করে যুগিবরাট গ্রামের মান্নান শেখের ছেলে আজিজুল শেখ (২৬), চান মিয়ার ছেলে জিয়ার শেখ (৩৫), নূরু গাজীর ছেলে হেমায়েত গাজী (৩০), সোবহান গাজী (২০) ও বিটু শেখের ছেলে এজাজুল শেখ (২২) এলোপাথারি মারধর ও রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে।
এ সময় তারা আমার ভাতিজা শরিফুলকে আমার কাছ থেকে আলাদা করে নিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। দ্রুত শরীফুলকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে ২২ মে রবিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীফুল সোমবার রাতে মারা যায়।
আরও পড়ুন : হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. গিয়াস ব্যপারী মোবাইল ফোনে বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তারা আমার কেউ দলীয় লোক না। আমি অল্প বয়সে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় কিছু মাতুব্বর ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে একটি পক্ষে ফেলছে। আমাকে সবাই ভোট দিয়েছিল। এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত না।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শরীফুলকে আহত করার ঘটনায় গত ২২ মে রবিবার থানায় একটি মামলা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। যেহেতু ছেলেটি মারা গেছে আগের অভিযোগটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গৃহীত হবে।
বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
সান নিউজ/এইচএন