শওকত জামান, জামালপুর : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুবকর তালুকদারের বিরুদ্ধে ইউএনও ও বিএডিসি কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালের অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন : কারাগারে হাজী সেলিম
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাউসি উত্তর পাড়া গ্রামের সমেষ শেখের ছেলে রফিকুল ইসলাম একটি অগভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর দ্বারস্থ হন। পরে গ্রাহককে তিনি একটি আবেদন দিতে বলেন।
বিধি মোতাবেক উপজেলা সেচ কমিটির সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রতিবেদন সাপেক্ষে অনুমোদন করে পিডিবি গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি।
পিডিবির সেচ সংযোগ পেতে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদস্য সচিব উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিএডিসি) স্বাক্ষরে সংযোগ দেয়া হয়। তবে পিডিবিতে আবেদনকারী রফিকুল ইসলামকে সেচ সংযোগ প্রদানের বিষয়টি সরিষাবাড়ী সেচ কমিটিও জানেনা। নির্বাহী প্রকৌশলী আবুবকর তালুকদার ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে সেচ সংযোগের অনুমোদন দেন।
আরও পড়ুন : রুশ মুদ্রার নাটকীয় উত্থান
অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে (ব্যাক ডেইট) সংযোগ দেন। সংযোগ পত্রে নির্বাহী প্রকৌশলী আবুবকর তালুকদার, ইউএনও উপমা ফারিসা ও বিএডিসি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাকসুমুল হকের স্বাক্ষর জাল করেন।
এদিকে ওই গ্রাহকের সংযোগটি ভিন্ন এক ব্যক্তির (পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার হাটবাড়ী গ্রামের জাফর আলী মন্ডলের ছেলে সবুর আলী) নামে ছিলো বলে জানা গেছে। তিনি একবছর আগে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে সংযোগ নিয়েছিলেন। ওই সংযোগটিই উৎকোচের বিনিময়ে নির্বাহী প্রকৌশলী পুনরায় রফিকুল ইসলামের নামে সংযোগ প্রধান করেন।
আরও পড়ুন : সিলেটে বিশুদ্ধ পানির সংকট
এ বিষয়ে সবুর আলী বলেন, তারা গতবছর পিডিবির ক্ষুদ্রসেচ সংযোগটি নেন। তবে বুরো ও আমন মৌসুমে অতিরিক্ত বিল আসায় তিনি সংযোগটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে চান। তবে মৌসুম না করেও বিল দিতে হবে জেনেও তিনি পিডিবির সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে নতুন সংযোগ নেন। তবে এ সংযোগটি এখনও চালু থাকার বিষয়ে তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, এ কাগজগুলো অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। তবে এ কাগজগুলো কার নামে সেটা আমার জানা নেই বলে জানান তিনি।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিএডিসি) মাকসুমুল হক বলেন, চলতি বছরে ২ ও ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা সেচ কমিটির দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় যথাক্রমে ১০২ টি এবং ৬৪টি অগভীর নলকূপ স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই কমিটির মিটিং এ রফিকুল ইসলামের নামে কোন ধরনের সেচ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি। এমনকি সে কিভাবে সংযোগ পেলো সেটাও তার জানা নেই বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন : ফ্রান্সে বিমান বিধ্বস্তে পাঁচ জনের প্রাণহানি
এদিকে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা (ইউএনও) বলেন, রফিকুল ইসলামের অনুমোদনের কাগজে থাকা ইউএনওর স্বাক্ষরটি তার নয়। এটা নকল স্বাক্ষর। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিএডিসি'র অফিসারের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সরিষাবাড়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রের (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী আবুবকর তালুকদার বলেন, তার কাছে এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।
সান নিউজ/এইচএন