এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): প্রকৃতিতে এখন জ্যৈষ্ঠ। জ্যৈষ্ঠকে বলা হয় মধুমাস। এ মাসেই আম, কাঁঠাল, লিচুসহ নানা জাতের ফল পাকতে শুরু করে। এসব পাকা ফলের মিষ্টি গন্ধ সহজেই মন কাড়ে। মধুমাস জ্যৈষ্ঠে আম-লিচুসহ নানা ধরনের সুস্বাদু ও রসালো ফলের গন্ধে ভরে যায় সারা দেশের বাজার। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল লিচুর কেনাবেচা।
লাল টসটসে রসালো লিচু থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। গ্রীষ্মকালীন এই ফলের পশরা এখন উপজেলার ছোট-বড় বিভিন্ন হাট গুলোতে। বাড়ির ছোটদের অতি প্রিয় এই ফলটি চোখের সামনে পড়লে না কিনে পারেন না অনেকেই। একারণে বাজারে লিচুর চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরা লিচু,আম ও কাঁঠাল বাজারে নিয়ে এসেছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পৌর বাজার, মাইজবাগ, উচাখিলা, আঠারবাড়ী ও সোহাগি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি লিচু। পাশাপাশি উঠতে শুরু করেছে ফলের রাজা আমও, পিছিয়ে নেই জাতীয় ফল কাঁঠালও।
গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ঈশ্বরগঞ্জ শহরে এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে মাথায় করে ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়ে এসেছেন। মফস্বল এলাকা থেকে কেউ কেউ আবার গাছ চুক্তি পাইকারি দামে কিনে বাজারে বিক্রি করছেন। অনন্য স্বাদের লিচু এখন ঈশ্বরগঞ্জের প্রায় প্রতিটি বাজারেই। মিষ্টি আর বর্ণিল মনকাড়া দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন জাতের লিচু কিনতে আগ্রহী ক্রতেরাও।
বাজারে লিচু কিনতে আসা তৌহিদ বলেন, বাজারে মৌসুমি সুস্বাদু রসালো ফল লিচু পাওয়া যাচ্ছে। নতুন ফল এসেছে তাই ৫০টি ১২৫ টাকা দিয়ে কিনলাম। কয়েকটি লিচু খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু,মিষ্টি ও পরিপক্ব। শুধুমাত্র মৌসুমি ফলের স্বাদ নিতেই লিচু কেনা।
লিচু ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা এই লিচুগুলো ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কিনে এনেছি। মৌসুমের শুরু হলেও বাজারে লিচুর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি না। ১০০টি লিচু বিক্রি করছি ২৪০টি ২৫০ টাকায়।
এদিকে কয়েকটি লিচু বাগান পরিদর্শন করে দেখা গেছে,বাগান গুলোতে মৌ মৌ সুগন্ধে মাতাল করেছে মানুষদের। বিভিন্ন জাতের পাকা লিচু,আম,কাঁঠাল বাজারে আসতে শুরু করায় ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়ির ভিটা, উঠান, আঙিনাতেও লিচুর গাছ লাগিয়ে থাকে লিচু প্রেমিকরা। এতে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট লিচু অনেকেই বিক্রি করে বাজারে। যা ঈশ্বরগঞ্জের অর্থনীতিকে সমবৃদ্ধ করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, এবছর উপজেলায় বিগত বছর গুলোর তুলনায় ভালো লিচুর আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিসের নানা উদ্যোগের ফলে কৃষকদের মাঝে লিচু আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি ফলন ও ভালো দাম পাওয়াতে কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে উঠছেন লিচু চাষে। এখানে চায়না,বোম্বাইসহ মোজাফ্ফর জাতের লিচু হয়। এবার আকারে লিচু ছোট হলেও ফলন ভালো হয়েছে। উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৫টি বাগান রয়েছে।
এছাড়াও বসতবাড়িতেও ভালো লিচুর আবাদ হয়েছে। চাষকৃত মোট জমির ৪ হেক্টর। মোট ফলন ২২ মেট্রিক টন।
সান নিউজ/এনকে