সান নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলে আদিবাসী ভূমিহীন নারীকে (২৫) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে উপজেলা পরিষদের নৈশ প্রহরী বেলাল হোসেন (৪৫)। অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ সোম। তবে অজ্ঞাত কারণে অভিযোগের আইনি সমাধান না করে সময়ক্ষেপণ করছেন তিনিও।
আরও পড়ুন: ১১০ টাকায় টিসিবির তেল বিক্রি স্থগিত
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নৈশ প্রহরী বেলাল হোসেন ছোট পদে চাকরি করলেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে নানারকম অপকর্ম আসছেন। তার বিরুদ্ধে অসহায় অনেক নারীর সর্বনাশ মতো আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। বেলাল অনেক অপকর্ম করেও পার পেয়ে গেছেন। তার অপকর্মের অন্যতম মদদ দাতা একই উপজেলার পিআইও অফিসের কর্মচারী বেলাল হোসেন। তিনি ওই উপজেলার রামচন্দ্রপুরের স্থানীয় বাসিন্দা। মূলত দুই বেলালের যৌথ নেতৃত্বে বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে উপজেলা জুড়ে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রটি উপজেলার বিভিন্ন সম্পদ লুটপাট, নারী নির্যাতনসহ নানারকম অপকর্মে জড়িত। ছোট পদে চাকরি করলেও কর্মকর্তাদের খাস লোক হিসেবে তাদের কাছে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এমনকি তাদের ক্লিয়ারেন্স ছাড়া ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার আসামি পর্যন্ত গ্রেফতার হয় না বলেও ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত বেলাল হোসেনকে রক্ষা করতে উঠেপড়ে লেগেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ সোম বরাবর অভিযোগ দেওয়ার পর কোনো প্রতিকার পাননি। উল্টো হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছে ওই নারী ও তার স্বামী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আদবাসী নারীর স্বামী একজন ভ্যানচালক। তাদের কোনও জমি নেই। বন বিভাগের জমিতে তারা একটি ঘর করে থাকতেন। কিছুদিন আগে বন বিভাগ তাদের সেই ঘরটি ভেঙে দেয়। এ বিষয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আসেন। তাদের সমস্যার কথা জানতে পেরে উপজেলা পরিষদের নৈশ প্রহরী বেলাল হোসেন তাদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলেন। ঈদের দিন (৩ মে) বিকেলে ওই নারীর স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে বেলাল সেখানে যান। এ সময় ওই নারীকে জাপটে ধরে ধর্ষণচেষ্টা করেন। ওই গৃহবধূ চিৎকার দিলে বেলাল পালিয়ে যান। পরে সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ সোমের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত বেলাল হোসেনের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও নাম্বারটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: শিশুকে জিম্মি করে মা-খালাকে গণধর্ষণ
অন্যদিকে, অভিযুক্ত বেলাল হোসেনকে আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত পিআইও অফিসের বেলাল হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ সোম গণমাধ্যমকে জানান, তিনি এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। বেলালের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বের এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। বেলালের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ