এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাঠে এখনও অনেক ধান কাটার বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর নাম আর কেউ মুছতে পারবে না
এদিকে হানা দিয়েছে বৃষ্টি। সেই সাথে ঈশ্বরগঞ্জে মাঠের ধান কাটার জন্য দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। যে স্বপ্ন এত দিন কৃষকেরা দেখছিলেন, অশনির বৃষ্টিতে তা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। ভিজে যাওয়া ধান শুকিয়ে ঘরে তুলতে পারবেন নাকি জমিতে ভিজে ধানে চারা গজিয়ে যাবে তা নিয়ে এখন চিন্তিত কৃষকেরা।
ধান কাটতে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ শ্রমিক অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাই তারা এবার ধান কাটতে আসেননি।
উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের নিচতুলন্দর গ্রামের কৃষক জয়নাল মিয়া জানান, মজুরি হিসেবে এক মণ ধানের দাম দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিক। কৃষকেরা বলছেন, অল্প জমি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম হওয়ায় এলাকারগুলোতে যেতে চায় না কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনও।
স্থানীয় হাতে গোনা দু-একজন শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরি বেশ চড়া। জমির দূরত্ব অনুপাতে আগে প্রতি বিঘা ধান কাটা-মাড়াইয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হলেও বর্তমানে সাড়ে চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা লাগছে বলে জানান কৃষকেরা। ফলে ঘুর্ণিঝড় অশনির ঝড়-বৃষ্টিতে জমিতে শুয়ে ও হেলে পড়া ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: নতুন লুকে চমকে দিলেন সালমান
সব চেয়ে বিপদে আছেন মধ্যবিত্ত কৃষকরা, যারা অল্প জমি থাকায় ভাড়াও দিতে পারেন না, আবার দিন মজুর ছাড়া নিজেরাও চাষাবাদ করতে পারেন না। উপজেলার পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামসহ অনেক ধানচাষি জানান, এ মৌসুমে বেশি দামেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন ধান ও খড় পচনের আশঙ্কা করছে তারা।
এদিকে, আগে যারা ধান কেটেছে তারাও সেদ্ধ করা ধান রোদে শুকাতে পারছেনা। ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে নেই কৃষকদের প্রাণচাঞ্চল্য। এ কারণে তাদের চোখে-মুখে রয়েছে বিষণ্ণতার ছাপ। কেউ কেউ আবার তুলেছেন ধানের বাজার নিয়ে প্রশ্ন। বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী নেই ধানের বাজার।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ছেলের হাতে মা খুন
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, ধান মাড়াইয়ের কাজ অর্ধেকের বেশি এলাকায় সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে ভিজে গেছে। আশাবাদী ভিজে যাওয়া ধানগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হলে তেমন ক্ষতি হবে না। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ