রহমত উল্লাহ, টেকনাফ: সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবিলায় কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরগুলোতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড় ‘আতঙ্কে’ আছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন পাহাড় ও বন কেটে ঝুঁকিতে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গারা। তবে এ দুর্যোগ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুমসহ প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদেশে কান্নাকাটি না করে আমার কাছে আসুন
ইতিমধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় "অশনি" মোকাবিলায় প্রতিটি ক্যাম্পে কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশনা সহ ৯টি কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মিকন তংচ্যগ্যা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "যে সকল পাহাড়ের উপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় তাদেরকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।"
পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে প্রত্যেক ক্যাম্পে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির ফোন নাম্বার সবাইকে জানিয়ে দিতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে, নিরাপত্তার লক্ষ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুতি করা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মোবাইল টিম প্রস্তুত, শেল্টারের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে শেল্টার সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে আলোচনাক্রমে ঘূর্ণিঝড় সহনীয় শেল্টার কিট বিতরণে ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরী খাবার বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান, ক্যাম্পে অবস্থিত শ্লোপ প্রোটেকশন, রিটেইনিং ওয়াল, গাইড ওয়াল মেরামত প্রয়োজন হলে জরুরীভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা, বৃষ্টি ও বন্যার পানি নিরাপদে নির্গমনের জন্য ক্যাম্প অভ্যন্তরে অবস্থিত ড্রেনসমূহ পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা এবং ক্যাম্পে কর্মরত সিপিপি, ডিআরআর স্বেচ্ছাসেবকদের দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি ও দুর্যোগ পরবর্তী প্রস্তুতি বিষয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মিকন তংচ্যগ্যা জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবিলায় প্রত্যেক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্দেশনা দিয়ে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। আমরা আগে থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সহতায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা শনাক্ত ২৩
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবিলায় বিষয়ে আমরা একটা চিঠি পেয়েছি উল্লেখ করে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা আশ্রয়কেন্দ্রসহ (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে রোববার ক্যাম্পে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলে বিশেষ করে পাহাড়ে ঝুকিঁপূর্ণ বসতিদের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়সার খসরু বলেন, সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ এখনো তেমন প্রভাব পড়েনি। তবু আমরা স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ হয়ে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ অবস্থায় আগামী ৭২ ঘণ্টায় উপকূল এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাননিউজ/এমআরএস