কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হত্যা পরবর্তী সহিংসতায় বাড়িঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের ইন্ধনে তার অনুসারীরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন : আইন মেনেই গেছেন হাজী সেলিম
বৃহস্পতিবার (৫ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের চণ্ডিবিলা গ্রামে বাড়িঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওই ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঈদের দিনের হত্যাকাণ্ডের জেরে ৩ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী চণ্ডিবিলা গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের জেরে চণ্ডিবিলা গ্রামের প্রায় ১০টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। চণ্ডিবিলা গ্রামের পাট ব্যবসায়ী আব্বাস শেখের স্ত্রী মদিনা বেগম (৩০) জানান, ঈদের দিন বেলা ৩ টার দিকে তাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ সময় ঘরে থাকা ২০০/২৫০ মন পাট, ৪/৫ মন পেঁয়াজের দানা, দামি আসবাবপত্র, ফ্রিজ, নগদ টাকাসহ বসতঘরটি পুড়ে যায়। দুর্বৃত্তরা একটি খেক্কোর এবং দুটি মোটরসাইকেল ভেঙে ফেলে।
আরও পড়ুন : যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে বেলারুশ?
মদিনা বেগম আরো জানান, ঘোষপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিস্কৃত সভাপতি এবং সাবেক ইউপি মেম্বার জামাল হোসেনের ইন্ধনে তার ভাই রিপন, ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ৪০/৫০ জন ভাংচুর ও লুটপাটে অংশ নেয়।
একই গ্রামের মো. ইউসুফ মোল্যার স্ত্রী হাছিনা (৫০) জানান, রিপনের নেতৃত্বে একদল লোক তাদের বাড়িঘর ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে।
সাবেক ইউপি সদস্য জামাল হোসেনের বাড়ির কয়েকশ গজের মধ্যে অবস্থিত শাহজাহান মোল্যার বাড়ি। শাহজাহান মোল্যা কৃষিকাজ করেন এবং বাড়ির পাশের একটি মসজিদের ক্যাশিয়ার।
আরও পড়ুন : এলপিজির দাম কমলো ১০৪ টাকা
ঈদের দিন সহিংসতার এক পর্যায়ে জামাল হোসেনের ইন্ধনে তার ভাই রিপন, ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ৪০/৫০ জনের ওই দলটি শাহজাহান মোল্যার বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে বলে তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা জানান।
লুটপাটকারীরা শাহজাহান মোল্যার নিকট রক্ষিত মসজিদের ৬০ হাজার, ব্যক্তিগত ৪০ হাজার এবং ঘরে থাকা আট আনা ওজনের একটি চেইন ও পাঁচ আনা ওজনের একটি কানের দুল ছিনিয়ে নেয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) সরেজমিনে ওই বাড়ি গেলে ইয়াকুব, লতিফ, আনোয়ার, সজল, মঞ্জু, নাজমুলসহ ১৫/২০ জনকে ওই বাড়ির লিচু গাছ থেকে লিচু ছিঁড়ে নিতে দেখা যায়। বাড়ির লোকেরা বাধা দিলে তাদের গালিগালাজ করে। এ সময় আশেপাশের লোকেরা জানান, এরা জামাল মেম্বারের অনুসারী। এলাকায় মহড়া দিচ্ছে।
আরও পড়ুন : তেল নিষেধাজ্ঞা চায় না হাঙ্গেরি
পাশের বাড়ির মোস্তফা মোল্যার গ্যাসের সিলিন্ডার, সেলাই মেশিন লুট করে নিয়ে গেছে এবং ফ্রিজ ভেঙে ফেলেছে। এছাড়া সামাদ মোল্যা, হাসমত মোল্যাসহ আরো কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জামাল হোসেন বলেন, আমি এসবের কোন কিছু জানি না। এটা আমার জানার বাইরে। অন্যায়কে আমি সাপোর্ট করি না। এসব লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু, নাজমুলদের তিনি তার দলের লোক মেনে নিলেও তাদের খারাপ কাজের দায় তিনি নিবেন না বলে জানান।
সান নিউজ/এইচএন