ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে হত দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাল বিতরণের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন : ঢাকায় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর
সদর উপজেলার বেশ কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। দরিদ্র ও অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে চাল না দিয়ে স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের মাঝে চাল দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
গত বুধবার সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে হত দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাল বিরতণ করা হয়। সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৃদ্ধা মহসিনা বেগম, ফাতেমা বেগম সারাদিন রোজা রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেও চাল পাননি। পরে মেঝেতে পড়ে থাকা চাল কুড়িয়ে ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরেন।
আরও পড়ুন : তেঁতুলতলা মাঠে থানা হবে না
৮নং ওয়ার্ডের এক বৃদ্ধা একমুঠো চালের আশায় সারাদিন পরিষদের মাঠে বসে থাকেন। কিন্তু তিনিও চাল না পেয়ে বিফল মনোরথে বাড়ি ফিরেন।
অভিযোগ রয়েছে, আকচা ইউনিয়নে অস্বচ্ছলদের ভিজিএফ’র কার্ড না দিয়ে স্বচ্ছল ও দলীয় লোকদের মাঝে ভিজিএফ’র চাল প্রদান করা হয়।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সারাদিন রোদে পুড়ে অসহায় বৃদ্ধারা যদি চাল না পায় তাহলে ভিজিএফ’র চাল কারা পেলো?
আরও পড়ুন : প্রয়োজনে টিআইবির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা
আকচা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছেমতো যাচ্ছেতাই ভাবে পরিষদ চালাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা তাকে ভোট দিয়েছে শুধু তাদেরকেই সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যারা সত্যিকারেই অসহায় দু’একজন ছাড়া বাকিরা কেউ পাননি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ বলেন, শুধু স্বচ্ছল নয় অস্বচ্ছলদেরকেও কেউ চাল প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : বিএসএফ’র বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মমতা
একই চিত্র ১৮নং সুখানপুখুরি ইউনিয়নেও। সেখানে চাল বিতরণের সময় প্রত্যেক কার্ডধারিদের আধা কেজি থেকে এক কেজি পর্যন্ত ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে বিষয়টি বরাবরের মত অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান।
অন্যদিকে বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে চাল বিতরণের সময় সুবিধাভোগিদের হাতে চাল তুলে দেয়ার পর দরিদ্র কার্ডধারি মানুষগুলোর কাছে বস্তার দাম আদায় করা হয় মাথাপিছু ২৫ টাকা করে। এতে ক্ষুদ্ধ ওই ইউনিয়নের সুবিধাভোগীরা।
আরও পড়ুন : বিএনপি নেতা মান্নান মারা গেলেন
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বনি আমিন সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বস্তার টাকা না নিয়ে চাল আনা নেয়ার খরচ দেবে কে? তাই খালি বস্তা প্রতি ২৫ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
অপরদিকে ঢোলারহাট ইউনিয়নে ভিজিএফ কার্ডের বরাদ্দ না পেয়ে নিজ অর্থায়নে হত-দরিদ্রদের মাঝে চাল বিতরণ করেন ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হোসেন আলী।
আরও পড়ুন : দেশে করোনা শনাক্ত ১৯
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভিজিএফ চাল বিতরণের মিটিং-এ আমি বৃষ্টির কারণে উপস্থিত থাকতে পারিনি। আমার ওয়ার্ডে ৬১৯জনের মধ্যে মাত্র ২২টি ভিজিএফের কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় আমাকে বলেন তোমাকে চাল বিতরণ করার দরকার নাই। আমার লোক গিয়ে বিরতণ করবে।
আরও পড়ুন : কাল শুরু ৬ দিনের ছুটি
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় জানান, হোসেন মেম্বার একজন বিএনপি পন্থি লোক। সবসময় মিথ্যা কথা বলে। হোসেনের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, কোন ইউনিয়নে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এইচএন