শফিক স্বপন, মাদারীপুর: মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ঈদে যাত্রীচাপ মোকাবিলায় থাকছে ৮৭টি লঞ্চ ও শতাধিক স্পিডবোট। এ ছাড়া ঈদের সময় মোট ১০টি ফেরি নৌরুটে যানবাহন পারাপার করবে বলেও ফেরিঘাট সূত্র জানিয়েছে। তবে দিনরাত ফেরি সার্ভিস থাকবে কিনা সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানিয়েছে। ফেরির পাশাপাশি নৌরুটে বরাবরের মতো থাকছে ৮৭টি লঞ্চ এবং শতাধিক স্পিডবোট। ঈদকে সামনে রেখে নৌযানগুলো সর্বশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সাধারণ মেরামত সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘাট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: নকল করতে গিয়ে ডুবছে বলিউড
বিআইডব্লিউটি’র বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্র জানিয়েছে, ঈদের আগেই সবগুলো লঞ্চের রুট পারমিট, সার্ভেসনদসহ টুকটাক মেরামত সম্পন্ন করে নিয়েছে মালিক কর্তৃপক্ষ। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদিকে নৌরুটে পারাপার হওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন, কোনো কোনো লঞ্চে জীবনরক্ষাকারী বয়া বেশি না থাকলেও অধিকাংশ লঞ্চেও তা পর্যাপ্ত নেই।
তাছাড়া লাইফ জ্যাকেটও দেখা যায় না লঞ্চে। প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী পারাপার করে থাকে। লঞ্চের ভেতরে, উপরে ও নিচে পর্যাপ্ত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেট রাখা উচিত। অথচ তা নেই।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম নৌরুট মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া। এই বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট হয়ে ঈদ মৌসুমে দৈনিক লক্ষাধিক মানুষ পারাপার হয়। ঈদের আগে ঘরে ফেরা এবং ঈদ শেষে কর্মস্থলে যোগ দেয়া মানুষের ঢল নামে এই দুই ঘাটে। অধিক যাত্রীদের চাপে এ সময় শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়। স্পিডবোটসহ নৌযানে শুরু হয় বাড়তি ভাড়ার উৎসব। এর ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী পারাপার করা হয়। সব মিলিয়ে এক দুর্ভোগের ঈদযাত্রায় পরিণত হয় এই নৌরুট।
আরও পড়ুন: এনু-রুপনসহ ১১ আসামির কারাদণ্ড
এদিকে গত এক বছর ধরে নৌরুটে ফেরি চলছে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে। এক বছর ধরে কখনো দীর্ঘদিন ফেরি বন্ধ আবার কখনো কিছু সময় চলাচলসহ সীমিত সংখ্যক ফেরি শুধু দিনের বেলায় চলছে। আর বন্ধ রাখা হয়েছে ভারী যানবাহন চলাচল। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাত্র ৫-৬টি ফেরি দিয়ে নৌরুট সচল রাখাকে এক ধরনের প্রহসনও বলছেন এই রুট ব্যবহারকারীরা। ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও পদ্মা পার হতে না পারার যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা রয়েছে যানবাহনের চালকদের। আসন্ন ঈদেও ফেরিতে বড় ধরনের দুর্ভোগের শঙ্কা বোধ করছেন চালকরা।
লঞ্চে ঢাকা থেকে আসা যাত্রী শহিদুল বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ছে। সামান্য বাতাস হলেই ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ঈদের ছুটিতে নৌরুটে যাত্রীদের ঢল নামে। এ সময় লঞ্চ ও স্পিডবোট কঠোর প্রশাসনিক নজরদারিতে রেখে চালানোর দাবি জানাচ্ছি। তাছাড়া নৌযানে পর্যাপ্ত সংখ্যক জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম থাকা প্রয়োজন। সে তুলনায় কিছুই দেখা যায় না।
সান নিউজ/এমকেএইচ