ঠাকুরগাঁও, প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার একটি ইটভাটার ইটের রঙ ভাল করার জন্য ভাটা শ্রমিক মোজাম্মেল হক হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেকে এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৪ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, রানীশংকৈল উপজেলার বলঞ্চা গ্রামের কমির উদ্দীনের ছেলে নজরুল ইসলাম, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে ইউনুস আলী ও বদির উদ্দীনের ছেলে সেকেন্দার আলী, চন্দন চহাট গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে আব্দুল জলিল ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর বাঙ্গাটুলি গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে কফিল উদ্দীন।
সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি সেকেন্দার আলী ও ইউসুফ আলী পলাতক রয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে সাজা কার্যকর হবে।
মামলার ভিকটিম ও দণ্ডিত আসামিরা সকলে এনএনবি ইট ভাটার শ্রািমক।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবি আব্দুল হামিদ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার এনএনবি ইটভাটার রঙ ভাল না হওয়ায় আগুন মিস্ত্রি কফিল উদ্দীন বিভিন্ন সময়ে স্বপ্নে দেখা দেখতে পেয়ে ওই ভাটায় মানুষের মাথা দেওয়া কথা ভাটা মালিক খলিল উদ্দীন ও ম্যানেজার মজিবর রহমানকে জানায়।সেই মোতাবেক ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে কফিল উদ্দীন ওই ভাটার শ্রমিক মোজাম্মেল হককে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে লেখক
২০১০ সালের ১৩ মার্চ রাতে ভাটা শ্রমিক কফিল উদ্দীনের নেতৃত্বে দণ্ডিত শ্রমিকরা ডাঙ্গী এলাকায় রুনা সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যায়। রাত ১২ টার পর সিনেমা দেখে ভাটায় ফেরার পথে সাহাবাজপুর হারামডাঙ্গী সড়কের ব্রীজের কাছে পৌঁছলে সকলে মিলে মোজাম্মেল হককে পেছন দিক থেকে গামছা দিয়ে চোখমুখ বেঁধে ফেলে এবং হারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলা কেটে লাশ পাশর্^বর্তী ভুট্টা ক্ষেত ফেলে পালিয়ে যায়।পরদিন পুলিশ মস্তকবিহীন ওই মরদেহ উদ্ধার করলে মৃতের স্ত্রী জোসনা বেগম তার স্বামী মোজাম্মেল হকের মরদেহ সনাক্ত করে। পরে পুলিশ এনএনবি ভাটায় অভিযান চালিয়ে ভাটার শ্রমিক সর্দার ইউনুস আলী ও আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করলে তারা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামির বর্ণনা মতে এনএনবি ইটভাটা হতে মস্তকের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জবানবন্দী ,পুলিশের চার্জশিট, প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষ্যপ্রমাণে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৫ জন আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ
এছাড়া ইটভাটা মালিক তোফাজ্জল হোসেন,খলিলুর রহমান ও ভাটা ম্যানেজার মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের কে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
সাননিউজ/এমআরএস